নাইক্ষ্যংছড়িতে মার্মাদের মঙ্গলশোভা যাত্রা যেন পাহাড়জুড়ে রংধনুর ঝিলিক

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:

পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়িতে মার্মা নৃ-গোষ্ঠীর মঙ্গলশোভা যাত্রা যেন পাহাড় জুড়ে রংধনুর ঝিলিক ছড়িয়ে পড়েছিল। শনিবার বাংলা নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরের বর্ণিল আয়োজনে সকাল সাড়ে ৭টায় নতুন সাজে সেজেছিল মার্মা তরুন-তরুনীরা। আর তাদের আগে-পিছে ছিল অগণিত বৃদ্ধ আর বৃদ্ধা। এদের সকলের মূখে ছিল এসো হে বৈশাখ-এসো এসো..।

এদিকে ১১ বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও আযোজন করা হয় ব্যতিক্রমধর্মী নানা আয়োজন। বণার্ঢ্য মঙ্গলশোভা যাত্রা, পান্তা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে এ দিবসটি পালন করা এ দু’প্রতিষ্ঠানেও।

মারমা উপজাতীয় নেতা চু চো মারমা জানান, মারমারা সাংগ্রাইকে বলে সাংগ্রেং। এ উৎসব পানিখেলা উৎসব নামে বহুল পরিচিত। এ উৎসব পালনের মূখ্য উদোশ্য পুরোনো বছরের সকল গ্লানি ও অপবিত্রতা এদিনের পবিত্র পানি দিয়ে মূছে ফেলা। আর নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া।  আর অপর মারমা উপজাতি নেতা মার্মা মৈত্রী সমবায় সমিতি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন কমিটির নেতা ক্যানু মার্মা জানান, এ বছর তারা সাদামাটা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। অন্যান্য বছরের ন্যায় হাইস্কুলের মাঠে জলকেলী বা অন্যান্য বিগ বাজেটের কোন অনুষ্ঠান করতে পারছে না তারা। এ জন্যে আয়োজনও নেই তেমন। আছে শুধু শনিবার দিন পুজা-অর্পণা, রোববার দিন অষ্টশীল, সোমবার পিঠাপূলি বিতরণসহ অন্যান্য সাদামাটা অনুষ্ঠান। জলকেলী যদি হয় তবে তা হবে উঠানে। হাইস্কুল মাঠে নয়। কেননা এ জলকেলীসহ  এসবের আনুষ্ঠানিকতার জন্যে লাগে ২ লাখ টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকা। যা তাদের কাছে নেই।  এ কারণে এখানকার অধিকাংশ পাহাড়িদের মনে তেমন আনন্দ নেই।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল জানান, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে শনিবার সারা দিন নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকাল পৌঁণে ৮টায় বর্ণাঢ্য মঙ্গলশোভা যাত্রা। এর পরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পান্তা  বিতরণসহ নানা কর্মসূচি।

অপরদিকে নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ১১ বিজিবি আয়োজন করে ব্যতিক্রধর্মী অনুষ্ঠানমালা। এখানে করা হয় বর্ণিল আয়োজনে মেলা, বানর নাচ, সাপের নাচ, পুতুল নাচ, বিভিন্ন পণ্যের প্রদশর্নী, নাগরদোলা, বিচিত্রা অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা এবং দুপুর ১টায় পান্তার আসর।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ১১বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ারুল আজিম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল, ক্যাপ্টেন ডা. জুনায়েদ, উপজেলা চেয়ারম্যাম(ভারপ্রাপ্ত)  কামাল উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান হামিদা চৌধুরী ও নাইক্ষ্যংছড়ির অফিসার ইনচার্জ আলমগীর শেখ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন