নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গরু পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান

নাইক্ষ্যংছড়ি  প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অবৈধ পন্থায় ক্রয় করে পাচার করা গরু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান থেমে থাকবে না, চলবে। এ অভিযান একটি বিষয়ে নয়, সব ধরনের পাচারের বিরুদ্ধে চলবে। বিজিবির কাজও সীমান্ত এলাকার অপরাধ দমন করা। চোরাচালানীদের শায়েস্তা করা।

রোববার(২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন মিলনায়তনে জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ৩১ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল আনোয়ারুল আজিম। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি সীমান্তে গরু চোর ও পাচারকারী বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনক। রাখাইন রাজ্য থেকে

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের গরু-ছাগল সেখানকার দু্র্বৃত্তরা সীমান্তের এসব লোকদের বিক্রি করছে পানির দরে। এ কারণে লোভি প্রকৃতির বাংলাদেশী  লোকজন এ কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। আর বিজিবি এসব অপরাধিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে-তারা নাখোশ হয়।

তিনি আরো বলেন, আবার অনেকে বলে বেড়ায় বিজিবি নাকি টাকা খায়। মূলত অপরাধি মহল নিজেদের সুবিধা আদায়ে দালালদের হাতে টাকা-পয়সা দিতেও পারে।  তিনি এদের হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, বিজিবির নাম দিয়ে কেউ টাকা নিলে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকুন!  আর বিজিবির কোন সদস্য এতে জড়িত থাকলে তাদের অপরাধের জন্যে একদিন নিজেরা সমস্যায় পড়বেন তারা।

একজনের অপরাধের বোঝা অন্য কেহ বহন করবে  না। সুতরাং নিজেরাও অপরাধ করবেন না আর দালালদের টাকা পয়সা দিয়ে অপরাধিদের উৎসাহিতও করবেন না। সবাই সতর্ক থাকুন। সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, ৩১ বিজিবির মেজর আরাফাত, কেপ্টেন জুনাইদ আহমদ, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাবিবুল্লাহ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী, রামু উপজেলার কচ্ছপিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাঈল নোমান, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক মাঈনুদ্দিন খালেদ, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর নয়ন ও গর্জনিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো ইউনুছ প্রমুখ।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, বিজিবি সীমান্তের গরু চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযান চালাচ্ছে তা অব্যাহত রাখা খুবই জরুরী। কেনানা এ গরুর মাঝে মানবতার রক্ত জড়িত আছে। অনেকে এ অভিযান জোরদারের বিষয়ে গুরুত্বারূপ করেন সবচেয়ে বেশি। কেননা এ সব গরু-ছাগল নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা সম্পদ। যারা ( বৌদ্ধ নরখাদকরা) এদের তাড়িয়ে দিয়েছে আজ তারাই এসব গরু-ছাগল এদেশের (বাংলাদেশের ) কিছু লোভি প্রকৃতির লোকদের বিক্রি করছে প্রতিটি গরু মাত্র ৫/১০ হাজার টাকা দরে। আর মহিষ ২০/২৫ হাজার টাকায়। যা বর্তমান বাজার দরের চাইতে ১০/২০ গুণ কম।

আবার অনেকে দাবি জানান, এ ধরনের অবৈধগরুর পাশাপাশি গরু ব্যাপারীকেও আটকের দাবি জানান অনেক বক্তা। তবে বিজিবির  এ অভিযান চালানোর সময় দালালদের বিষয়ে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তারা।

উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এক শ্রেণির লোভী প্রকৃতির লোক ও ব্যবসায়ী সীমান্তে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। আজকাল তারা নাইক্ষ্যংছড়ির আশারতলী, চাকঢালা, ফুলতলী, রেজুআমতলী, বাইশপাড়ি, তুমরু ও অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে অসংখ্য গরু-ছাগল-মহিষ পাচার করছে বাংলাদেশে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন