নানিয়ারচরে ৫ ইউপি সদস্যসহ নিখোঁজ ২০

নিজস্ব প্রতিনিধি:

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় ৫জন ইউপি সদস্যসহ ২০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা নিখোঁজ হন। ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টি এসব ইউপি সদস্য নিখোঁজের জন্য ইউপিডিএফকে দায়ী করেছে।

ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টির আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা (বর্মা) এ বিষয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে অস্ত্রের মুখে এসব ইউপি সদস্যদের গুম করেছে ইউপিডিএফ’র সশস্ত্র ক্যাডাররা।

ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টির এ নেতা জানান, ইউপিডিএফ আমাদের রাজনৈতিক দলকে ধ্বংস করার জন্য হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের বদনাম করার জন্য আমাদের সংগঠনের তথা কথিত নব্য মুখোশ বাহিনী নাম দিয়ে চলতি বছরের ১৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে নানিয়ারচর উপজেলা সদরের ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল চাকমা।

তিনি বলেন, স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে আমাদের সংগঠনের নাম নব্য মুখোশ বাহিনী। আমরা এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছি। কিন্তু আমাদের সংগঠন এসব কাজে জড়িত নয় বলে তিনি জানান।

এ নেতা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল ওই উপজেলায় নব্য মুখোশ বাহিনী প্রতিরোধ কমিটি করে উপজেলার অন্যান্য ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করে, যা ভিত্তিহীন বানোয়াট।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এবং এর প্রতিবাদে মিছিল করে ওই উপজেলার অন্যান্য ইউপি সদস্যরা। তাদের দাবি, তাদের স্বাক্ষর জাল করে ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ স্মারকলিপি পেশ করে।

ইউপি সদস্যরা মিছিল করায় তাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ইউপিডিএফ নানিয়ারচর শাখার গ্রুপ কমান্ডার দলীয় নাম শ্রাবণ চাকমা (প্রকৃত নাম শান্তিময় চাকমা) এ ঘটনার সমাধানের কথা বলে আন্দোলনরত ইউপি সদস্যদের ডেকে নেয় উপজেলার ৩নং বন্দুক ভাঙা ইউনিয়নের ভাঙামোড়া নামক স্থানে।

আর ইউপি সদস্যরা যখন ভাঙ্গামোড়া নামক স্থানে পৌঁছে তখনি ৩০জনের একটি সশস্ত্র দল গুলির মুখে ওই ইউপি সদস্যদের ইঞ্জিনচালিত বোটে করে উপজেলার ত্রিপুরাছড়া নামক স্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে  ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টির এ নেতা জানান।

এসময় ওই সশস্ত্র দলে ইউপিপিএফ’র এরিয়া কমান্ডার অটল চাকমা এবং ইউপিডিএফ বিচার বিভাগের প্রধান উদয় শংকর চাকমা ছিলো বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে অপহৃত সকলেই নানিয়ারচর উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ১২জনের নাম পাওয়া গেছে। এর হলেন, সাবেক্ষং ইউনিয়নের রতন দিব চাকমা, রিপেন চাকমা, পরানধন চাকমা, চিচিরময় চাকমা, রুমী চাকমা, চম্পা চাকমা, রত্মা চাকমা, এবং নানিয়ারচর ইউনিয়নের প্রিয়লাল চাকমা, পূর্ণ কুমার চাকমা, বাবুল বিকাশ চাকমা, রিতন চাকমা, নানিয়াচরের সাবেক মেম্বার সেন্টু চাকমা। বাকী ৮ জনের নাম পাওয়া যায়নি।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে নানিয়ারচর সদর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ও নব্য মুখোশ বাহিনী প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক জ্যোতিলাল চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনার সম্পর্কে জানেন না বলে জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, আমি উপজেলার বাইরে আছি। এ ঘটনার  বিষয়ে আমার অফিসারদের সাথে কথা বলবো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন