নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হাফেজ ফারুকের পরিবারকে জাফর আলমের অনুদান

চকরিয়া প্রতিনিধি:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নে ভোটের দিন নির্বাচনী সংঘর্ষে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ আল ফারুকের নামাজে জানাযায় অংশ নিয়েছেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামমী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম।

সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকালে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জানাযার নামাজের আগে সংক্ষিত বক্তব্য রাখেন। ওইসময় তিনি নিহত ফারুকের মুত্যুর ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে আইনের মাধ্যমে সনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে ঘোষণা দেন।

এর আগে তিনি নিহত ফারুকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা ও স্বজনকে শান্তনা দেন। এসময় তিনি নিহত ফারুকের পরিবারকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ লাখ টাকা অনুদান দেন। এরপর তিনি সংঘর্ষে আহত আওয়ামী লীগের আরও ৬জন কর্মীকে দেখতে যান। তাদের প্রত্যেককে ৬০ হাজার টাকা করে নগদ ৩ লাখ ৬০ হাজার তুলে দেন আলহাজ জাফর আলম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা সদস্য এসএম গিয়াস উদ্দিন, জিএম আবুল কাসেম, উম্মে কুলছুম মিনু, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছরওয়ার আলম, সহ-সভাপতি আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিটু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক মো.বারেক, টৈইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম শহীদুল ইসলাম, রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর, সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাবুল, রাজাখালী সভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি, সম্পাদক আবুল কাসেম আজাদ, পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন বাহাদুর প্রমুখ।

পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের মরহুম আবুল কালামের ছেলে আবদুল্লাহ আল ফারুক একজন কোরআনে হাফেজ। তিনি পবিত্র কোরআন বুকে ধারণ করার পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলেন। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণকালে রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ছাত্রলীগ কর্মী হাফেজ আবদুল্লাহ আল ফারুককে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় আরও ৬জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হয়।

নিহত ফারুকের মাতা আয়েশা বেগম বিলাপ করে বলেন, পবিত্র কোরআন হাফেজ হওয়ার পরও শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার আদর্শের রাজনীতি করতে গিয়ে কখনো পরিবার থেকে বাধা সৃষ্টি করা হয়নি। ছেলের স্বপ্ন ছিল শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভাল একটি চাকরি করে তার মা ও ভাই বোনদের সুখে রাখবে। কিন্তু ঘাতকেরা তা হতে দেয়নি। মা পুত্রের হত্যাকারীদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন।

এদিকে সোমবার বিকালে ফারুকের নামাজে জানাযায় হাজার হাজার জনতার উপস্থিতিতে নবনির্বাচিত আলহাজ্ব জাফর আলম বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক বিএনপির সন্ত্রাসী নেতাদের হাতে জীবন দিয়ে আমাকে এমপি নির্বাচিত করেছেন। এ ত্যাগের বিনিময়ে আমি চকরিয়া-পেকুয়াবাসীর সেবা করতে চাই। তাঁর অকালে চলে যাওয়া আমাকে আজীবন পিড়া দেবে। আমি তাঁর বদলে পরিবারের জন্য কিছু করতে চাই। আল্লাহ পাক নিরাপরাধ ফারুককে বেহেস্ত দান করুক। এসময় ফারুকের জন্য জাফর আলম সকলের কাছে দোয়া চান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন