Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

নো ম্যান্স ল্যান্ডে আটকা পড়া রোহিঙ্গারা: ‘কেউ জানতোই না যে আমরা এখানে আছি’

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

 

গত বছর আগস্ট মাসের পর থেকে রোহিঙ্গারা যখন দলে দলে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে – তখন কিছু লোক আটকা পড়ে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মাঝামাঝি একটা জায়গায় যাকে বলে নো ম্যানস ল্যান্ডে, যেখানে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ। পরিবার নিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ডে চলে আসেন মো. সেলিম ( নিরাপত্তার কারণে এখানে তার ছদ্ম নাম ব্যবহার করা হচ্ছে)। সংগে স্ত্রী ,আর চার সন্তান।

মি. সেলিমের সাথে আরো কিছু মানুষ আটকে পড়েন নো ম্যানস ল্যান্ডে।

তিনি বলছিলেন “প্রথম দিকে খুব খারাপ ছিল, কারণ কেউ জানতো না আমরা এখানে আছি। পরে জানাজানি হলে আন্তর্জাতিক রেডক্রস সংস্থা আমাদের সাহায্য করে”।

“আমরা এখানে থাকতে চাই না, বাংলাদেশেও যেতে চাই না। মিয়ানমারে পরিস্থিতি ভালো হলে ফেরত যাবো” – বলেন তিনি।

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে গত ছ’মাস ধরে আটকা পড়ে আছেন ছয় হাজারের মত রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনে আটকে পড়া এসব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফেরত নিতে রাজি হয়েছে।

আটকে পড়া এমন দুইজন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলেছেন ফারহানা পারভীন।

তমব্রু রাইট অঞ্চলে ৩৪/৩৫ ব্লকে এই নো ম্যানস ল্যান্ড। মি. সেলিম বলছিলেন, বিভিন্ন সংস্থার সাহায্য শেষ হয়ে গেলে আমরা বাজার সদাই করার জন্য তার ভাষায় ‘ম্যানেজ করে’ বাংলাদেশের দিকে আসি।

তিনি বলছিলেন, পলিথিনে ঘেরা, ছাপড়ার মত জায়গায় থাকি নো ম্যানস ল্যান্ডে। এক সাথে এত মানুষ থাকা খুব কষ্টের।

নো ম্যানস ল্যান্ডে থাকা আরেকজন মো. জাফর।

তিনি বলছিলেন, মিয়ানমারে মাছের ঘের আর হাল চাষ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনিও আসেন এখানে।

তিনি বলছিলেন – “একেবারে শরণার্থী জীবন বলতে যা বোঝায় সে জীবন এখন আমাদের। এখানে যেসব শিশু আছে তাদের পড়াশোনার জন্য জন্য তিন চারটা মাদ্রাসা করে দিয়েছে। আরবি ছাড়া আর কোন পড়াশোনা নেই। ছোট একটা জায়গার মধ্যে কোন রকম থাকছি। কোন ধরণের সুবিধা নেই”।

আন্তর্জাতিক রেডক্রস এবং ইউএনএইচসিআর তাদের খাদ্য ও ত্রাণের ব্যবস্থা করছে।

সরকারি হিসেব বলছে, প্রায় ৬ হাজার মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছে। এ মাসের ২০ তারিখে দু’দেশের সীমান্তে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনে আটকে পড়া প্রায় প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফেরত নিতে রাজি হয়েছে।

বাংলাদেশের শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম বলছিলেন “তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে যারা নো-ম্যানস ল্যান্ডে আছে তাদের ফিরিয়ে নেবার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে”। কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে তার কোন নির্দিষ্ট সময় মিয়ানমারের কর্মকর্তারা বলেন নি, জানিয়েছেন মি. কালাম।

এদিকে সামনে আসছে বর্ষাকাল। নো ম্যানস ল্যান্ড যারা বাস করছেন তাদের প্রধান দুশ্চিন্তা এখন সেটা নিয়ে।

মো. সেলিম এবং জাফর দুজনেই বলছিলেন, বর্ষার আগে যদি তাদের কোন একটা দেশে না নেয়া হয় তাহলে পরিবার পরিজন সহ বন্যার পানিতে ডুবে মরা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।

কারণ নো ম্যানস ল্যান্ডের দুই ধারেই দুদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে এখন তাদের জীবন।

 

সূত্র: বিবিসি

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন