Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

পরাশক্তি ভারতের বিপক্ষে ফুটবলে জয়ের সাক্ষী খাগড়াছড়ির তিন পাহাড়ি কন্যার ভাগ্য পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

ভারতের বিপক্ষে ফুটবলে জয়ের সাক্ষী খাগড়াছড়ির তিন পাহাড়ি কন্যা এবার দারিদ্র্যতাকে জয় করতে যাচ্ছে। সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি ভারতকে একই টুর্নামেন্টে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ান হন সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আর এ দলে তিন পাহাড়ি কন্যা অনুচিং, আনাই মগিনি ও মনিকা চাকমা।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী সরেজমিনে আনুচিং, আনাই মগিনিদের বাড়ি পরিদর্শন করে তাদের বাড়ি ও ব্রিজ নির্মাণ এবং তিন নারী ফুটবলারকে ৫০ হাজার টাকা করে এফ ডিয়ার করে দেওয়াসহ তাদের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহন করা ঘোষণা দিয়েছে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের এমন ঘোষণায় নারী ফুটবলের তিন পাহাড়ি কন্যার পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার।

সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপে ফাইনাল খেলায় দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি ভারতের বিপক্ষে যে জয় পেয়েছিল সে জয়ের সাক্ষী খাগড়াছড়ির তিন পাহাড়ি কন্যা আনুচিং মগিন, আনাই মগিনী ও মনিকা চাকমা। প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলার মধ্যদিয়ে পেশাদার খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন বুনতে থাকেন তারা।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাতভাইয়া পাড়া সাথোঅং কার্বারী পাড়ার যমজ বোন অনুচিং মগিনী ও আনাই মগিনীদের গল্প। সাত ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট তারা। পরিবারের অভাব অনটন থাকায় ঠিক মতো তাদের দেখভাল করতে না পারার ভয়ে জন্মের পরপরই দত্তক দেয়ার পরিকল্পনা ছিল পিতা মাতার।

অপর দিকে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম সুমন্তপাড়ার গ্রামের মেয়ে মনিকা চাকমা। খেলাধুলা দূরের কথা মৌলিক অধিকারের অনেক সুবিধাই নেই এই দুই গ্রামে। তবুও নিজের প্রবল ইচ্ছে শক্তি ও ক্রীড়া নিপুণতা দুর্গম গ্রাম থেকে তুলে এনেছে তাদেরকে।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতার বিভাগীয় পর্যায়ের খেলায় তিন জনের খেলার কৌশল নজরে আসে রাঙামাটির ক্রীড়া সংগঠক বীর সেন চাকমার। তার তত্বাবধানে আনুচিং, আনাই ও মনিকাকে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয় দক্ষ খেলোয়াড় হিসেবে।

অবশেষে ভারতের বিপক্ষে শিরোপা ঘরে এনে দেশজুড়ে পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়িকে আলোচনায় নিয়ে আসে এ তিন পাহাড়ি কন্যা। কিন্তু বাংলাদেশকে জয় এনে দিলেও নিজেদের দারিদ্র্যতাকে জয় করতে পারেনি তারা।

মঙ্গলবার(৯ জানুয়ারি) দুপুরে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী সরেজমিনে অনুচিং, আনাই মগিনিদের বাড়ি পরিদর্শনে যান। তিনি এ সময় বলেন, এ তিন কন্যা শুধু খাগড়াছড়ির নয়, তারা পুরো বাংলাদেশের গর্ব।

তিনি  বলেন, তারা অনেক প্রতিবন্ধকতার সাথে যুদ্ধ করে এ পর্যন্ত এসেছে। তারা সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে চিনিয়েছে। তিনি তাদের বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া ও যাতায়াতের সুবিধার্থে খাগড়াছড়ি ছড়া ব্রিজ নির্মাণ এবং তিন নারী ফুটবলারকে ৫০ হাজার টাকা করে এফ ডিয়ার করে দেওয়াসহ তাদের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহন করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, তিনি এ পরিষদে না থাকলেও যাতে সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকে সে ব্যবস্থা করে যাবেন।

আনুচিং-আনাই মনিগীর বাবা রিপ্রুচাই মগ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী তার বাড়ি পরিদর্শন করায় ও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিতে পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অপর দিকে আনুচি মগিনী ও আনাই মগিনী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নারী ফুটবল অঙ্গনকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য জুয়েল চাকমা এ ধরনের অনুপ্রেরণা পেলে বাংলাদেশের নারী ফুটবলার আরো এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন