পানছড়িতে সিএনজি মালিক ও চালক সমিতির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:

জেলার পানছড়িতে অটোরিক্সা ( সিএনজি) মালিক ও চালক সমবায় সমিতি লি. এর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের তীর ছুড়েছে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দিকে।

জানা যায়,  ২০১১ সালে এই সমিতি গঠিত হয়। বর্তমানে তা সমবায় থেকে রেজি:ভুক্ত। যার রেজি: নং-৪২৪/খাগড়া। ২০১১ তে সমিতি গঠনের পর থেকেই সভাপতি/সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছে উষা কান্তি চাকমা ও মো. মোসলেম। হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চালক ও মালিকদের অভিযোগ তারা দু’জন মিলে দীর্ঘ ৭ বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। নিরপেক্ষ কোন অডিটর দিয়ে তদন্ত করলেই সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

সমিতির কয়েক সদস্য জানান, গাড়ি প্রতি মাসিক চাঁদা ছিল ছয়শত টাকা। শুধুমাত্র ২০১৭ সালে তা করা হয় পাঁচশত টাকা। মালিক প্রতি গাড়ি ভর্তি পাঁচ, দশ, পনের, বিশ ও সর্বশেষ ত্রিশ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। যা সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সর্বমোট প্রায় বিয়াল্লিশ লক্ষ টাকার মতো। কিন্ত বর্তমানে ব্যাংকে জমা রয়েছে চার লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা। তাদের দাবি নয়-ছয়ের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এরই মাঝে সভাপতি/সম্পাদক তাদের দূর্নীতি ঢাকতে নিজেদের মনগড়া এক কমিটির কাছে হিসাব-নিকাশ বুঝিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। এ নিয়ে বিরাজ করছে উত্তেজনা। কোন ধরণের দূর্ঘটনা ঘটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এ ব্যাপারে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোসলেম জানায়, দুর্ণীতির প্রশ্নই আসেনা। তিনি জানান, গত সাত বছরে সর্বমোট আয় পঁয়তাল্লিশ লক্ষ বাইশ হাজার চারশত সত্তর টাকা ও ব্যয় চল্লিশ লক্ষ একুশ হাজার সাতশত ত্রিশ টাকা। বর্তমানে চার লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা স্থিতি রয়েছে। তিনি জানান, তিনটি আঞ্চলিক সংগঠন ছাড়াও চার-পাঁচটি প্রশাসনকে মাসিক চাঁদা দিতে হয়।

তাছাড়া পানছড়ি বাজারে প্রায় দশ লক্ষ টাকা দিয়ে প্লট ক্রয় ও নিজের আলিশান বাড়ি নির্মানের ব্যাপারে তিনি বলেন, নিজের জায়গা-জমি বিক্রি করে এ প্লট ক্রয় ও বাড়ি করেছি। এদিকে অনেকেই জানান, তবলছড়ি সমিতির সদস্যদের হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার সময়ও বড় অংকের দুর্ণীতি করেছে। যা তবলছড়ির সদস্যদের জিজ্ঞাসা করলেই আসল রহস্য বের হবে।

এ দুর্নীতির বিষয়ে ২নং চেংগী ইপি চেয়ারম্যান কালা চাঁদ চাকমা ও ১নং লোগাং ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যুত্তর চাকমা দুই দফা বসলেও সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন নিজের মনগড়া মত হিসাব দিতে চাইলে তা বিচারক’রা প্রত্যাখান করে বলে জানায় লোগাং ইউপি চেয়ারম্যান।

এদিকে সিএনজি মালিক মো. ওয়াজিবুল্লা জানায়, প্রতি তিন বছর পরপর নির্বাচন করার থাকলেও এ পর্যন্ত কোন নির্বাচন হয় নাই। বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদককে এক প্রকার জোর করে নামানো হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সমিতির সভাপতি উষা কান্তি চাকমা জানায়, সাধারণ সম্পাদকের কথা বলে যে বক্তব্য  পাবেন তার সাথে আমিও একমত। গরীব ও নীরিহ কিছু মালিক ও চালকের দাবি, সমিতির সদস্যসংখ্যা নিয়ে নয়-ছয়, ভর্তির টাকা নিয়ে জালিয়াতি, বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রশাসন দিয়ে হয়রানির হুমকি ও তাদের মনগড়া মত নতুন একটি কমিটিকে গোপন আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা এসবের হাত থেকে মুক্তি পেতে নিরপেক্ষ অডিট করলেই সব বেরিয়ে আসবে বলে তাদের দাবি। তারা প্রশাসনের হস্তপক্ষেপ চায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন