পার্বত্য এলাকাকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করতে একটি গোষ্ঠী কাজ করে যাচ্ছে: ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা

লংগদু প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ তৃণমুল বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ মানব অধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা বলেন, পার্বত্য এলাকাকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করতে একটি গোষ্ঠী কাজ করে যাচ্ছে। এ দেশ আমাদের সকলের। এ দেশে বাস করার সকলের অধিকার আছে। এখানে কে বাঙ্গালী কে পাহাড়ি সেটি ভাগ করার কিছু নাই। আমরা সবাই এক দেশের নাগরিক।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাসযোগ্য অবস্থান তৈরি করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সে জন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সকলের মধ্যে মানবতা, ভ্রাতৃত্ববোধ থাকতে হবে। সম্প্রীতি রক্ষা করে সকলকে বসবাস করতে হবে। এটা গড়ে উঠলে নিজেদের মধ্যে আর হিংসা হানাহানি থাকবে না। এক সুখী জনপদ গড়ে তুলতে এর কোন বিকল্প নাই।

শনিবার দুপুরে লংগদু রেস্ট হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি লোকজনদের সাথে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা লংগদু অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে কথা বলেন সেই সাখে যুবলীগ নেতা ও মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নের পরিবারের সাথেও সাক্ষাত করেন। এ সময় নয়নের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান তুলে দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ তৃণমুল বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব মো. আক্কাস আলী, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া, মহাসচিব এডভোকেট ইয়াকুব আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ মানব অধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সদস্য এডভোকেট অন্ত্রা সেলিম হুদা, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিয়ার আব্দুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সাকিব, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলার সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন স্থরের নেতৃবৃন্দ।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে কথা বলেন, কালাচান চাকমা বলেন, পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এভাবে সহিংসতা চলতেই থাকবে।

লংগদু পার্বত্য জনসংহতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনি শংকর চাকমা বলেন, বর্ষার মৌসুমে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ অবস্থায় আপনারা সরকারের কাছে আমাদের কথাগুলো গিয়ে জানাবেন সেটাই আমাদের চাওয়া। তিনি আরও বলেন, আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেন নাই। যতদ্রুত সম্ভব নিরাপত্তা সহ আমাদের বাড়িঘরে বসবাসের উপযোগী করা হউক।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১ জুন) লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ দীঘিনালার চারমাইল এলাকায় পাওয়া যায়। ২ জুন সকালে প্রতিবাদ মিছিল থেকে স্থানীয় পাহাড়ীদের দোকান, বসত ঘরসহ চারটি গ্রামের দু’শতাধিক বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়। স্থানীয় বাঙালিরা এ ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করে।

এদিকে, শুক্রবার (৯ জুন) খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হলে তারা নয়ন হত্যাকাণ্ড বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয় বলে জানায় পুলিশ। নয়নের মোটর সাইকেলটিও দীঘিনালার মাইনী নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুই ব্যক্তি রমেল চাকমা ও জুনেল চাকমা পুলিশকে জানিয়েছে মোটরসাইকেল ছিনতাই করার জন্যই তারা নয়নকে হত্যা করে।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন