পার্বত্য জেলার ভিক্ষু সংঘের সংঘনায়ক আর নেই

রুমা প্রতিনিধি:

পার্বত্য জেলার ভিক্ষু সংঘের সংঘনায়ক ও মিনঝিড়িপাড়া বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত উঃস্বাসানা আর নেই। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় বান্দরবানের রুমায় নিজ বৌদ্ধ বিহারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার প্রয়াণকালে বয়স ছিল ৮৯ বছর। এ সংঘনায়কের মৃত্যুতে রুমা উপজেলা তথা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

রুমা অগ্রবংশ অনাথালয়ের পরিচালক ও আশ্রমপাড়া বৌদ্ধ বিহারে বিহারাধ্যক্ষ উঃনাইন্দিয়া থের বলেন, সর্বজন শ্রদ্ধাভাজন ও ভিক্ষু সংঘের সংঘরাজ প্রবীণ ভিক্ষু উস্বাসানা মহাথের’র মহান প্রয়াণে আমাদের মন শুধু ব্যথিত করেনি, আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বলেন, গুরুভান্তের মহান বিয়োগে আমাদের মাঝে শোকের মাতম বইছে ঠিক। তবে তার প্রয়াণের পরবর্তী অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান মহাযজ্ঞে কিভাবে শেষ করব, এসব করণীয় দিকগুলোকে এমুহূর্ত থেকে আগানোর কাজ করছি।

রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মারমা মুঠোফোনে জানান, সুষ্ঠুভাবে যাতে গুরুভান্তের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান হয় সেদিকেই এখন সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। সোমবার সকালে চট্ট্রগ্রাম থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম এসে তার মৃত দেহ নিরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

সূত্র জানায়, তিনমাস আগে নিজ বিহার প্রাঙ্গণে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডে ব্যথা অনুভব করেন। তারপর থেকে নিজে নিজে আর হাঁটাচলা ও ওঠাবসা করতে পারেননি তিনি।  বিছানায় পড়ে ছিলেন। গত ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১০/১২দিন পর রুমায় মিনঝিরি পাড়া বৌদ্ধ বিহারে ফেরেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শনিবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

রুমা অগ্রবংশ অনাথালয়ের পরিচালক উঃনাইন্দিয়া থের তথ্যমতে, নিকায় সংঘরাজ উঃস্বাসানা’র বয়স এখন ৮৮ বছর। কিশোর বয়সে শ্রমনত্ব গ্রহণ করেন। আর ২০ বছর বয়সে বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে উপ-সম্পদা গ্রহণের পর থেকে এখন পর্যন্ত তার বর্ষাবাস বা ওয়া-৬৮। বৌদ্ধ ধর্মের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী বর্ষাবাস বা ওয়া’র জ্যোষ্ঠতার ভিত্তিতে পার্বত্য জেলার ভিক্ষু সংঘের নিকায় সংঘরাজ হিসেবে অধিষ্ঠিত হন ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে। তখন থেকে আমৃত্যু সংঘনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৩০ সালের জুন মাসে বান্দরবানের রুমা উপজেলার মিনঝিরিপাড়ায় মারমা বংশের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন উঃস্বাসনা মহাথের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন