পাহাড়ে সেনাবাহিনী-বিজিবি আর্তমানবতার সেবায় কাজ করছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:

পার্বত্য শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তির প্রবাহ, সম্প্রীতির বন্ধন আর উন্নয়নের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম সাজেদুল ইসলাম বলেছেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের পথে অনেক সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাহাড়ে সেনাবাহিনী-বিজিবি আর্তমানবতার সেবায় কাজ করছে।

পাহাড়ের শান্তির অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অংশ। কেউ যদি এ পাহাড়কে নিয়ে ভিন্ন কোন স্বপ্ন দেখেন, তবে তারা ভুল করছেন। এ স্বপ্ন পুরণ হবার নয়।

মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১টার দিকে খাগড়াছড়ির পলাশপুর জোন সদরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডারের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৪০, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর পরিত্যক্ত ক্যাম্পের ভূমি দখল করে রাতের আঁধারে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, পাহাড়ের এক ইঞ্চি জমি কাউকে দখল নিতে দেবনা। তিনি বলেন, সরকার শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে চায়। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে পুরোদমে কাজ চলছে। চাকুরী ও ব্যবসা বানিজ্যে পাহাড়ি ভাইবোনদের জন্য বাড়তি সুবিধা নিশ্চিত করেছে সরকার।

উন্নয়ন আর শান্তির অবস্থান পাশাপাশি অবস্থান করছে উল্লেখ করে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম সাজেদুল ইসলাম বলেছেন, শান্তি না থাকলে উন্নয়ন হবেনা। উন্নয়ন না হলে আমরা পিছিয়ে যাবো। সরকার ও সরকারি কাজে নিয়োজিতদের সহযোগিতা করতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি বিশেষ মহল পাহাড়ের পরিস্থিতিকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা তা হতে দিতে পারিনা। শক্ত হাতে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। সন্ত্রাসের পথ থেকে স্ব-স্ব সন্তানকে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি তাদের দায়িত্ব নেব। তাদের জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

আমাদের সন্তানরা মাদকে জড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে মাদক থেকে ফিরিয়ে আনুন। সামাজিকভাবে মাদকের অপব্যবহার সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচি গ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি।

পলাশপুর জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মিরাজুল ইসলাম, গুইমারা রিজিয়নের জেটুআই মেজর মো. মঈনুল আলম, পলাশপুর জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মকদুমুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ, মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. খাইরুল আলম, মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মো. জাকির হোসেন, মাটিরাঙ্গা ফরেস্ট রেঞ্জার মো. জহিরুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা, গোমতি ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন লিটন, আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গনি, বড়নাল ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর ও বেলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ছাড়াও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-সাংবাদিক, হেডম্যান-কার্বারী ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ মতবিনিময় সভা শেষে পলাশপুর জোনের আওতাধীন বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তার অংশ হিসেবে অনুদান ও কয়েকজন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে পাঠ্যপুস্তক বিতরন করেন গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম সাজেদুল ইসলাম।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন