পুনঃনির্বাচনের দাবিতে ১৩ ও ১৪ জুন রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দিয়েছে জেএসএস

Rangamati JSS pic copy

নিজস্ব প্রতিনিধি:

রাঙামাটির বরকল উপজেলার ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের ছোটহরিণার ভোট কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত ও পূনঃ নির্বাচনের দাবিতে আগামী ১৩ ও ১৪ জুন টানা ৩৬ ঘন্টা রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ ঘোষণা করেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। বৃহস্পতিবার রাঙামাটি জিমনেশিয়াম চত্বরে ইউপি নির্বাচনে সরকার দলের কারচুপির প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি‘র সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

সমাবেশে সন্তু লারমা অভিযোগ করেন, রাঙামাটির কয়েকটি ইউপিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও বেশ কয়েকটি ইউপিতে সরকার দল প্রশাসনকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিজিবি সরকারি দলের নির্বাচনী কারচুপিতে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, যে সব ইউপিতে কারচুপি হয়েছে সেখানে নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচন দাবি করেন সন্তু লারমা।

তিনি বলেন, রাঙামাটিতে ষষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয়নি। নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ প্রশাসনে সহযোগিতায় ভোট ডাকাতির করে জেএসএসের সমর্থীত প্রার্থীর বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। তা পাহাড়ের জুম্মজাতি মেনে নিবেনা। তাই ভুষণছড়ার ইউনিয়নে দ্রুত পুণঃনির্বাচন দেওয়া না হলে পাহাড় আবারও অশান্তি হয়ে উঠবে। তাঁর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে বলে হুমকি দেন তিনি।

Suntu Larma Pic2

সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা সভাপতি সুবর্ণ চাকমার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটিরবরকল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনি চাকমা, আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের আহবায় বিজয় কেতন চাকমা, জে এস এস নেতা উদয়ন ত্রিপুরা প্রমুখ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির এ নেতা সন্তু লারমা আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে শাসক গোষ্ঠীকে জুম্মজাতি বাধ্য করেছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি করার জন্য। এখন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে চুক্তি পুর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। বাধ্য করতে হবে ভূষণছড়া ইউনিয়নে পুনঃনির্বাচন দিতে। যতদিন পর্যন্ত এ দাবি বাস্তবায়ন না হবে, ততদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র রাঙামাটি নয়, তিন পার্বত্য জেলায় আন্দোলন চলবে। ওই কেন্দ্রে পুনঃরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত না তাহলে পাহাড়ের জুম্মজাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। তিনি পার্বত্য চুক্তির চলমান আন্দোলন ও ভূষণছড়ার পুনঃনির্বাচনের দাবিকে বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুম্মজাতিকে প্রতিরোধ গড়ে তুলার আহবান জানান।

উল্লেখ্য, গত ৪জুন ষষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রাঙামাটি জেলার ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থীত প্রার্থী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) ২৩টিতে ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ১৩টি নির্বাচিত হয়। তাছাড়া বরকল উপজেলার ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের ছোটহরিণা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জেএসএস প্রার্থীকে পরাজিত করে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন নির্বাচত হয়।

সমাবেশে শেষে জিমনেসিয়াম চত্বর থেকে সংগঠনটির উদ্যেগে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রাঙামাটি শহরের বনরুপা চত্বর ঘুরে গিয়ে আবারও জিমনেসিয়াম চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।#

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন