পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অংশ নিলো ৮ মাস ধরে কারাবন্দী বিএনপি সমর্থক
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
দীর্ঘ ৮ মাস ধরে একটি হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি আছেন টেকনাফের বাহারছড়া হাজমপাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে ছৈয়দুল ইসলাম (২২)।
বিএনপি সমর্থক বলে কারাগারে থেকেও মামলা থেকে বাঁচতে পারলেন না। পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় টেকনাফ থানায় দায়ের করা পৃথক ৩ মামলাতেই তাকে আসামি বানানো হয়েছে।
সুত্র মতে, গত ৬ এপ্রিল টেকনাফের বাহারছড়া ৭ নং ওয়ার্ডের হাজমপাড়ার ময়না খাতুন নামের এক মহিলা নিহতের ঘটনায় টেকনাফ থানায় জিআর মামলা নং ১৮১/১৮ দায়ের করেন নিহতের ভাই আবদুল মান্নান। ওই মামলায় এজাহারনামীয় ৭ জন আসামির মধ্যে ছৈয়দুল ইসলাম ১ নম্বর আসামি। গত ১১ এপ্রিল থেকে তিনি কারাবন্দি। কিন্তু পুলিশের হিসেবে তিনি গত ১ ডিসেম্বর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অংশ গ্রহণ করেছেন।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, কারাগারে থেকে কীভাবে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অংশ গ্রহণ করলেন ছৈয়দুল ইসলাম? সরকারি কাজে বাঁধাদান ও ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ছিনতাইয়ের সুযোগইবা কীভাবে পেলেন?
অবশ্যই এবিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার কারা সুপার বজলুর রশীদ আখন্দ বলেন, ছৈয়দুল ইসলাম টেকনাফ থানার জিআর মামলা নং ১৮১/১৮ এর আসামি হিসেবে প্রায় ৮ মাস ধরে কারাবন্দি। কারাগারে থেকে বাইরের কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার সুযোগ নেই। একজন কারাবন্দী আসামি কীভাবে আরেকটি ঘটনায় আসামি হলেন তা ‘বিস্ময়ের বিষয়’ বলেও মন্তব্য করেন জেল সুপার।
গত ১ ডিসেম্বর টেকনাফের শামলাপুর মেরিন ড্রাইভ এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান ওই এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে হাবিব উল্লাহ। এ ঘটনায় এজাহারনামীয় ২৩ জনসহ আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলাগুলো হলো- জিআর-৭৫৮/১৮, জিআর-৭৫৯/১৮ ও জিআর-৭৬০/১৮। তিন মামলাতেই ১৩ নং ক্রমিকে আসামি দেখানো হয়েছে ৮ মাস যাবত কারাবন্দী ছৈয়দুল ইসলামকে। বিএনপির সমর্থক হওয়াই তার অপরাধ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে পুলিশের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি ভুক্তভোগিদের।
এ প্রসঙ্গে জানতে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে ফোন করলে রিসিভ করেননি।
কারাবন্দী ব্যক্তিকে কীভাবে আসামি করা হলো জানতে চাইলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, অনেক সময় আসামির স্বীকারোক্তির ভিক্তিতে মামলায় আসামি দেয়া হয়। অনেক সময় আটক ব্যক্তিকে তার সহযোগী কেউ আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়। আসামির স্বীকারোক্তির ভিক্তিতে আসামি করা হয়। এরপরও বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান পুলিশ সুপার।