পেকুয়ার টইটং বন বিটের প্রহরীর বিরুদ্ধে নানান অপকর্মের অভিযোগ

xcdf5

এ.এম.জুবাইদ,পেকুয়া:

পেকুয়ার টইটং বনবিটে কর্মরত বন প্রহরী (ফরেষ্ট গার্ড) মো: আবদু সালামের নানান অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। এই বন প্রহরী টইটং বনবিটে যোগদান করার পর থেকে স্থানীয় গাছ চোর সিন্ডিকেটের কতিপয় সদস্যদের সাথে আতাঁত করে লাখ লাখ অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর টইটং ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ী গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৮ মাস পূর্বে টইটং বনবিটে বন প্রহরী হিসেবে যোগদান করেন আবদু সালাম। আর যোগদান করেই চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন টইটং বনবিটের অধীনে বিভিন্ন সংরক্ষিত বনভূমির গাছ বিক্রি থেকে শুরু করে সংরক্ষিত বনায়নের জায়গাও বিক্রি করে দিচ্ছেন বিভিন্ন জনের কাছে। এর বিনিময়ে কাড়ি কাড়ি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই অসাধু বন প্রহরী আবদুস সালাম। তার ভয়ে স্থানীয় কোন সচেতন ব্যক্তি তো দূরের কথা সংশ্লিষ্ট বন বিটের কর্মকতা ও টু-শব্দ করতে সাহস পায়না। কেউ তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে নানাভাবে হয়রানীর প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হয়। তাই তার ভয়ে সবাই তটস্থ।

তার এহেন কুটির জোর নিয়েও টইটংয়ের জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এ দূর্নীতিবাজ বন প্রহরী সালামের অপসারণসহ জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান বন সংরক্ষক ঢাকার নিকট লিখিত অভিযোগ ও দায়ের করেছে। জানা যায়, টইটং বন বিটের আওতাধীন সংরক্ষিত বনভূমি এলাকা কেরুণছড়ি, তারাবনিয়ারছড়া ও মৌলভী হাসানের জুম থেকে স্থানীয় আবদুল মান্নান, বাদশা মাঝি ও শামশুল আলমের কাছ থেকে যৌথভাবে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত মাস দেড় মাস পূর্বে ৭টি বসতি তৈরীর জন্য সরকারী বনভূমি বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন প্রহরী সালাম তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বনভূমি অবৈধভাবে বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে এ বিটের আওতাধীন অধিকাংশ সংরক্ষিত বনভূমিতে অবৈধ বসতি আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই টইটং বনবিটের অধীনে সব বনভূমিই বেহাত হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় পরিবেশবিদরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টইটং-বাঁশখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত পাচার হয় কোটি কোটি টাকা মূল্যমানের সরকারী বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আর এসব গাছ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যদের কাছ থেকে ওই বন প্রহরী সালাম নিয়মিত মোটা অংকের মাসোয়ারা আদায় করে থাকেন। এর ফলে এ সড়ক দিয়ে গাছ পাচার আগের তুলনায় র্বদ্ধি পেয়েছে। এদিকে টইটং বাজার, হাজী বাজারসহ অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত প্রায় ৪/৫টি অবৈধ স‘মিলের মালিকদের কাছ থেকে নিয়মতি মাসোয়ারা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বন প্রহরী সালামের এহেন সরকার ও বন বিভাগের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে চরমভাবে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে টইটং বনবিটে কর্মরত বন প্রহরী আবদু সালামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে হয়রানী করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন, গাছ-পাচারকারীদের সাথে তার কোন ধরণের সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বারবাকিয়া রেঞ্জে কর্মকর্তা উত্তম কুমার পাল জানিয়েছেন, টইটং বনবিটের প্রহরী আবুদ সালামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ স্থানীয়রা তাকে অবগত করেছেন। খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন