পেকুয়ায় অনুমোদনহীন ১২টি করাতকল: হুমকির মুখে সংরক্ষিত বনাঞ্চল

download

এম. জুবাইদ পেকুয়া:

পেকুয়ায় সরকারী অনুমোদনহীন করাতকলে চলছে নির্বিচারে বনাঞ্চলের গাছ চিরাইয়ের মহোৎসব। বছরের পর বছর ধরে এমন কর্মযজ্ঞ চললেও পরিবেশ অধিদপ্তর বা ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের দেখাই মিলে না। ফলে চরম হুমকির মুখে পড়ছে উপজেলার বনজ সম্পদ।

সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা। সাত ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন যথাক্রমে টইটং বারবাকিয়া ও শিলখালীর ভৌগলিক অবস্থান পাহাড়ি বনাঞ্চল। পেকুয়া উপজেলা কক্সবাজার জেলার অধীন হলেও এখানকার পাহাড়ী ৩ ইউনিয়নের বিস্তির্ণ বনভূমি চট্টগ্রাস দক্ষিণ বনবিভাগের অধীনে। যার কারণে দুই জেলার প্রশাসনিক টানা হেচঁড়ার মধ্যে দিয়ে সরকারী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দেখভাল করা হয়ে থাকে। যার কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বনজ সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ দোটানা অবস্থায় বিদ্যামান। আর এর সুযোগ নিচ্ছে নানা ধরণের অসাধু লোকজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেহেরনামায় চড়াপাড়া নতুন বাজারের প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে ২টি, পশ্চিম পাশে ১টি, বারবাকিয়া ইউনিয়নে ২টি, টইটং ইউনিয়নের হাজ্বী বাজারে ২টি, মৌলভী বাজারে ২টি টইটং বাজারে ১টি, রাজাখালীর আরব শাহ বাজারে ২টি, পেকুয়া কবির আহমদ চৌং বাজারে ৩টিসহ পুরো উপজেলায় প্রায় অর্ধ ডজনেরও বেশী গাছ চেরাই করার করাত কল রয়েছে। এসব করাত কলের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতির বিধান থাকলেও এখানে তা নেই প্রায় সকল করাতকলের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক করাতকল মালিক বলেন স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব করাতকল। কোন ধরণের সরকারী অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত এসব করাতকলে দিনের পর দিন ধরে চলছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রধান বনজ সম্পদ গাছপালা চিরাই মহোৎসব। এসব করাত কলের মালিক পরিচালকদের সাথে অসাধু গাছ ব্যবসায়ী ও বনদস্যু সিন্ডিকেটের রয়েছে গভীর সখ্যতা। তাদের মাধ্যমে করাতকলগুলোতে উপজেলার উপকূলীয় বনবিভাগ ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছপালা কেটে এনে নির্বিচারে চিরাই করে অবাধে চলছে কাঠের ব্যবসা।

পরিবেশ সচেতন সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজের লোকজন অভিযোগ করে বলেন, সাতটি ইউনিয়নের ছোট একটি উপজেলায় অর্ধ ডজনাধিক কাঠ চিরাইয়ের অনুমোদনহীন করাতকল হওয়ায় চরম হুমকি ও ঝুঁকির মূখে পড়ছে উপজেলার বিস্তির্ণ সংরক্ষিত বনাঞ্চল।

এপ্রসঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধিন বারবাকিয়া রেঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমারের কাছে জানতে চাইলে তিনি উপজেলার কোন করাতকলেরই সরকারী অনুমতি নেই মন্তব্য করে তা বন্ধে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করবেন বলে জানান।

এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মারুফুর রশিদ খাঁনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শীঘ্রই সরকারী অনুমোদনহীন করাতকল বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন