পেকুয়ায় গৃহবধুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
পেকুয়ায় এক প্রবাসীর গৃহবধু চম্পা দাশের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বারবাকিয়ার বহুল আলোচিত সজল বৈদ্য’সহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার জলদী (বাঁশখালী পৌরসভা) এলাকার শ্রী রাম মহাজন পাড়ার অনন্ত দাশের পুত্র বাসু দাশ(২৫) নামের এক ব্যক্তি নিজেকে যৌতুক দাবীতে নির্যাতনে মৃত গৃহবধু চম্পা দাসের ভাই পরিচয়ে গত ২১/১০/২০১৫ তারিখে চকরিয়া জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে খুনের মামলাটি রুজু করেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদীর বোন চম্পা দাশকে ২ বছর পূর্বে বিয়ে করে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের পূর্ব টইটং কেরনছড়ি এলাকার মৃত দুলাল কান্তি দাশের পুত্র শিবু কান্তি নাথ (২৭)। বিয়ের পর চম্পা দাশের স্বামী ও শশুর পরিবারের লোকজন নিহতের পরিবারের কাছ থেকে দফায় দফায় যৌতুক দাবী করতে থাকে। যৌতুকের চাহিদা না মেটানো চার মাসের অন্তসত্বা থাকাবস্থায় শশুর বাড়ির লোকজন চম্পা দাশের উপর দফায় দফায় অমানষিক নির্যাতন চালানোয় গর্ভের সন্তান হত্যার ঘটনা ঘটায়।

পরবর্তীতেও যৌতুক দাবীতে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন সহ মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা নিহত চম্পা দাসের উপর অব্যাহত নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে নিহতের প্রবাসী স্বামী শিবু কান্তি দাসের পৃষ্টপোষকতায় গত ০৮/১০/২০১৫ইং তারিখে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নাথপাড়া এলাকার মৃত শুধাংসু কুমার নাথের পুত্র বহুল আলোচিত বৈদ্য সজল কান্তি দেবনাথে’র তত্বাবধান ও পরিকল্পনায় অপরাপর আসামীরা পরিকল্পিতভাবে বাদীর বোন গৃহবধু চম্পা দাশকে হত্যা করে মরদেহের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বসতঘরের মাত্র ৬ ফুট উচ্চতার একটি ঘরের খুটির সাথে টাঙ্গিয়ে রাখে। পরে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসাবে প্রচার করায়।

কিন্তু নিহত চম্পা দাসের দাম্পত্য জীবনের নানা বিষয়ের পর্যালোচনা, সুরতহাল প্রতিবেদন ও আসামীদের আচার আচরনের বিষয়াধি নিয়ে বাদী ও তার অসহায় পরিবারের মাঝে সন্দেহ হওয়ায় গৃহবধু চম্পা দাসকে পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় খুনের কথা উল্লেখ করে চম্পা দাসের স্বামী শিবু দাস, তার ভাই দীপক কান্তি দাস, পূর্ব টইটং কেরনছড়ি এলাকার মৃত দুলাল কান্তি দাশের পুত্র স্বপন কান্তি দাশ, মৃনাল কান্তি দাশের পুত্র মিন্টু কান্তি দাস, সুনীল কান্তি দাসের পুত্র শিবু কান্তি দাশ কালু, মৃত মহন ধর কান্তি দাসের পুত্র ফনি কান্তি দাশ, মৃত মৃনাল কান্তি দাসের স্ত্রী শিখা রানী দাশ, মৃত দুলাল কান্তি দাশের মেয়ে টুম্পা রানী দাশ, মিন্টু কান্তি দাশের মেয়ে শঙ্খিরানী দাশ, বাঁশখালী পুর্ব শিলকূপ মাতব্বরপাড়া এলাকার মৃত তাহের আহমদের পুত্র আলী মর্তুজা ও তার স্ত্রী রাবিয়া বছরী’র যোগসাজে সংশ্লিষ্টতায় চম্পা দাশকে হত্যার বর্ণনা মামলায় আলোকপাত করা হয়।

বিজ্ঞ আদালত এজাহারটি আমলে নিয়ে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু, আসামীদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে পেকুয়া থানার ওসি’কে নির্দ্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, মামলার বাদী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানিয়েছেন, তিনি কর্মসুবিধার স্বার্থে চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন। তার বোন চম্পা দাশ খুনের ঘঠনায় মামলা দায়ের করায় আসামী ও তাদের পক্ষের লোকজন প্রতিনিয়ত বাদীর প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। পেকুয়া থানার ওসি মোঃ আবদুর রকিব মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন