পেকুয়ায় ছেলেধরা আতংকে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

untitled21

পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় ছেলে ধরা গুজবের আতংকে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে স্কুলে দিন দিন এ গুজব আংতকের কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার আশংকাজনক ভাবে কমে যাচ্ছে। ছেলে ধরার গুজব আতংক কাটাতে সংশ্লিষ্ট সমন্বিত পদক্ষেপ দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, উপজেলায় গত সপ্তাহে থেকে ছেলে ধরা চক্রের আভির্বাবের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ আতংকের জের ধরে উপজেলার প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানে ছাত্র ছাত্রী শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যায়। পেকুয়ার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলে ধরা চক্রের আভির্ভাব উৎপাতের গুজবের আতংক ছড়িয়ে পড়ে সব চাইতে বেশি। একই গুজবে হাই স্কুল ও বিভিন্ন মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্টানেও ছেলে ধরা গুজবের আতংকে দিন দিন শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার কমে যাচ্ছে।

মেহেরনামা নন্দীরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. নুরুল আলম এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ছেলে ধরা আতংকে তার শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার এতোই অস্বাভাবিক হারে কমেছে যে, গতকাল প্রথম শ্রেনী হতে ৪র্থ শ্রেনীতে ছাত্র ছাত্রীর উপস্থিতি ছিলনা বলেই চলে। ৫ম শ্রেণীর ৫০/৬০জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্লাসে উপস্থিত ছিল মাত্র ১৮-২০জনের মতো। গুজবের এ ছেলে ধরা আতংক কাটাতে না পারলে কয়দিন পর আহুত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন নিয়েও দেখা দিয়েছে চরম সংশয় শংকা।

বর্তমানে পেকুয়ার সর্বত্রে ছেলে ধরা আতংক বিরাজ করছে। যার ফলে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। এ নিয়ে অভিভাবকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। পেকুয়ার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে জানা যায় ভুয়া গুজব সর্বত্র রটাচ্ছেন কিছু বখাটে যুবকরা। এ পর্যন্ত কোন সুনিদিষ্ট কাউকে ছেলেধরা হিসেবে চিহ্ণত করতে পারেনি কেউ এবং কার ছেলে নিয়ে গেছে তারও কোন প্রমান নেই। একটি প্রবাদ আছে চিলে কান নিয়ে গেছে বলে চিলের পিছনে ছুড়ছে কার কান নিয়ে গেছে তার প্রমান নেই। কিন্তু পেকুয়ায় সেই ধরণের ঘটনা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। ছেলে নিয়ে গেছে কিন্তু কার ছেলে নিয়ে গেছে তার প্রমান নেই।

ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে পিঠিয়ে গুরুত্বর আহত করছে জনতা। কয়েকজন হাসপাতালে এখনো ভর্তি আছে। তারা এ নিয়ে কোন কিছু জানতে চাইলে তারা কিছু তো জানে না। এসব পাগল মহিলাদের মারধর করে আতংক ছড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান সচেতন এলাকাবাসী।

পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পেকুয়া সদর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক বারবাকিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাষ্টার মো. নাছির উদ্দিন এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছেলে ধরা আতংকের গুজব কাটাতে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ অপরিহার্য্য। এই নিয়ে মাইকিং ও জনসচেতনতা সভার আয়োজন করাও খুবই জরুরী। এবিষয়ে আমাদের সংগঠনের তরফ থেকে মাননীয় ইউএনও, ওসি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অনুমতি প্রার্থনা করা হয়েছে বলেও জানান তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন