পেকুয়ায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ভূয়া দলিল লেখকের প্রবণতা বৃদ্ধি, প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা বিক্রেতারা

এ.এম.জুবাইদ,পেকুয়া:

পেকুয়ায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ভূয়া দলিল লেখকদের প্রবণতা বৃদ্ধিতে হয়রানি শিকার হচ্ছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। এসব ভূয়া দলিল লেখকদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা স্বয়ং সাব রেজিস্ট্রার আশরাফুল ইসলাম। জানা যায়, ২৯ আগষ্ট অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান পেরিয়ে অবশেষে সাব রেজিস্ট্রি অফিস উপজেলা পরিষদে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে সপ্তাহে ২ দিন সোম ও মঙ্গলবার সাব রেজিস্ট্রির কার্যক্রম চলে। এই ২ দিনে পেকুয়ায় জমি ক্রয় বিক্রয় করার জন্য ক্রেতা বিক্রেতারা পেকুয়া চৌমুহুনীতে আসলে দলিল লেখকদের নিয়োজিত দালালদের দিয়ে দূর দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদেরকে কম টাকায় রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা বলে এ লক্ষ টাকার দলিলের জন্য ১৪ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু সরকারী নীতিমালা অনুযাযী দলিল লেখকরা সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখতে পারে।

এসব দালালরা অসহায় মানুষদেরকে ধোকা দিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছে। এসব কিছু পেছনে দায়ী দলিল লেখকরা। সরকারী সনদ প্রাপ্ত দলিল লেখকদের কাছে সহকারী হিসাবে যারা কাজ করে তারাও এখন বড় বড় দলিল লেখক হিসাবে পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, যারা নিজের নাম নিজে ভালোভাবে লিখতে পারে না তারা কিভাবে দলিল লেখক পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে?

সাব রেজিস্ট্রি নীতিমালা অনুযায়ী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করার জন্য কেবলমাত্র সরকারী সনদধারী দলিল লেখকরাই ক্রেতা বিক্রেতা নিয়ে প্রবেশ করে দলিল করতে পারে। কিন্ত তা পেকুয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের জন্য ব্যতিক্রম। যারা দলিল লেখকদের সহকারী তারাই সাব রেজিস্ট্রারের সাথে আনাগোনা এবং গোপনে টাকা লেনদেনসহ নানা অপরাধ করে যাচ্ছে। তাদের অনুরোধে রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রি চলে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে। 

এ ব্যাপারে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান দলিল লেখক সহকারীদের মধ্যে যদি কেউ এ ধরণের গোপন আতাত করে রাতে রেজিস্ট্রি কিংবা ভূয়া দলিল লেখক পরিচয় দেয় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। তিনি আরো জানান, রেজিস্ট্রি করার সময় দলিল নিয়ে দলিল লেখককে মোকাবেলা করতে হয় এতে সহকারীরা যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু কাজের চাপে অনেক সময় সহকারীদেরকে পাঠানো হয়। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলার দায়িত্বে নিয়োজিত সাব রেজিস্ট্রার আশরাফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি আগামী সপ্তাহে অফিসে এসে কথা বলার জন্য বলেন এবং অবৈধ টাকা কথা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে নিয়ম মোতাবেক অফিসে সনদধারী দলিল লেখকরাই রেজিস্ট্রি করে এবং অনেক সময় দলিল লেখকদের সহকারীরাই দলিল নিয়ে আসে বলে স্বীকার করে আর কোন কথা বলতে রাজি না হয়ে দ্রুত অফিস থেকে চলে যান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন