ফ্রান্সে খ্রিষ্টধর্ম বিদায়- স্বাগত ইসলাম!

1545912_711670915531084_452888226_n

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, পার্বত্যনিউজ:
গত ২৫ বছরে ফ্রান্সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের হার দ্বিগুণ বেড়েছে। গত ১০০ বছরে ফ্রান্সে যতগুলো ক্যাথলিক গির্জা নির্মিত হয়েছে, গত ৩০ বছরেই তার চেয়ে বেশি মসজিদ ও নামায কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। ফ্রান্সের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম নেতা দালিল বুবাকিউর বলেছেন, ফ্রান্সে মসজিদের সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৪০০০-এ উন্নীত করা হবে। ইসরাইল ন্যাশনাল নিউজে Catholic France, Adieu; Welcome, Islam শিরোনামে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

এক সময়ে গির্জা কন্যা নামে দেশটির যে পরিচিতি ছিল তাও এখন আর অবশিষ্ট নেই। রাষ্ট্রীয় সেক্যুলারিজম এবং ইসলামের মধ্যে ‘ক্রসফায়ারে’ পড়ে ক্যাথোলিক ফ্রান্স নৈতিকভাবে এখন মৃতপ্রায়। বিশিষ্ট লেখক রেনাল্ড কেমাস বয়েসেটসের প্রসঙ্গে স্পষ্ট করেই বলেছেন, সেক্যুলারিজম হচ্ছে মুসলিম বিজয়ীদের ট্রজান হর্স।

ফ্রান্সে জনসংখ্যা তাত্ত্বিক হিসেবে ইসলামই বিজয়ী। ফ্রান্সে অমুসলিম পরিবার প্রতি শিশুর সংখ্যা ১.২। কিন্তু মুসলিম পরিবারে শিশুর সংখ্যা এর ৫ গুণ বেশি।

প্যারিসের প্রধান ধর্মগুরু আর্চবিশপ মনসিঙ্গর ভিঙ্কট ট্রয়েস বলেন, আগে ফ্রান্সের গ্রামবাসী প্রতি রবিবার গির্জায় যেতো। এখন যায় প্রতি দুই মাসে একবার। তাই গির্জাগুলোর তিন চতুর্থাংশই খালি পড়ে থাকে। ফ্রান্সের মত একই অবস্থা পুরো ইউরোপের। বর্তমানে প্রতি ২০ জন ফরাসী নাগরিকের একজন ধর্মকর্ম পালন করেন। আছে যাজক সংকটও। ফরাসী যাজক না পাওয়ায় এখন তাদের স্থান দখল করছেন আফ্রিকার যাজকরা। ফ্রান্সে যাজকের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯০০০-এ। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও যাজকের সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার। ২০০০ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শিশুদের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা গ্রহণের হার ২৫ শতাংশ কমেছে। ধর্মীয়ভাবে বিয়ের হার কমেছে ৪০ শতাংশ।

ফরাসী একটি প্রতিষ্ঠানে পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ১৯৬৫ সালে ফ্রান্সে নিজেকে ক্যাথলিক বলে পরিচয় দিত ৮১ শতাংশ মানুষ। ২০০৯ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪ শতাংশে। এ সময়ের মধ্যে রবিবারের প্রার্থনা অনুষ্ঠানে যোগদানকারীর সংখ্যা ২৭ থেকে কমে দাড়িয়েছে মাত্র ৪.৫ শতাংশে।

ক্যাথলিক ফ্রান্সের জন্য ইসলামে ধর্মান্তর একটি চ্যালেঞ্জ। গত ২৫ বছরে ফ্রান্সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের হার দ্বিগুণ বেড়েছে। অন্যদিকে পুরনো গির্জাগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে গেস্টের বাসিন্দারা ঐতিহাসিব সেইন্ট-পিয়ের-অক্স-লিয়েন্স গির্জাকে শেষ বিদায় জানায়। যুদ্ধে ধ্বংস একটি গির্জার ওপর ১৮৫৪ থেকে ১৮৭০ সালের মধ্যে এটি পুনঃনির্মিত হয়েছিল। এটির বিদায়ের কারণ- সেখানেই কেউই আসত না। ফলে এটি পরিত্যক্ত হয়েছিল।

হিসাবে দেখা গেছে, গত ১০০ বছরে ফ্রান্সে যতগুলো ক্যাথলিক গির্জা নির্মিত হয়েছে, গত ৩০ বছরেই তার চেয়ে বেশি মসজিদ ও নামায কেন্দ্র তৈরি হয়েছে।ইতোমধ্যেই অন্তত ৬০টি ক্যাথলিক গির্জা বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলোর বেশ কয়েকটা মসজিদে রূপান্তরিত হবে।

প্যারিসের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শহর ক্রেটেইলে ধর্মান্তরিতদের জন্য একটি আধুনিক ও সুপ্রশস্ত মসজিদ রয়েছে। ৮১ মিটার উঁচু মিনারের এই মসজিদটিতে বছরে ১৫০ বার ইসলাম গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটা ফ্রান্সে ইসলামের শক্তিশালী অবস্থানের প্রতীক।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইউরোপে ইসলাম. ফ্রান্সে ইসলাম, ইসলাম, ফ্রান্স
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন