Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

বদরখালী সমিতির বিরুদ্ধে জলাধার ভরাটের অভিযোগ প্রমাণিত, ৬ লাখ টাকা জরিমানা

চকরিয়া প্রতিনিধি:

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী সমিতির বিরুদ্ধে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন সাগর চ্যানেলে মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন পূর্বক জলাধার ভরাটের ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে।

মোহাম্মদ রিদুয়ানুল হক নামে সমিতির এক সভ্য বাদি হয়ে ছয় মাস আগে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদফতরে দায়ের করা লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতের তদন্তে ঘটনাটি প্রমাণিত হয়েছে।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন অভিযুক্ত সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ তিনজনকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

আদেশ কপিতে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক উল্লেখ করেছেন, তদন্ত চলাকালে ঘটনার বিষয়ে সমিতির সভাপতি হাজী নুরুল আলম সিকদার, সম্পাদক একেএম ইকবাল বদরী ও মেশিন মালিক আবুল কাশেম সিকদার প্রকাশ ভুট্টো সিকদার অভিযোগের আলোকে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অপরাধ স্বীকার করেছেন।

উল্লেখিত জরিমানার টাকা আগামী ৩ মার্চ তারিখের মধ্যে পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক। একই সঙ্গে ভরাটকৃত বালু জলাশয় থেকে অপসারণ করতে সমিতিকে এবং নির্দেশনার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদেশে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক উল্লেখ করেছেন বালু উত্তোলন পূর্বক জলাশয় ভরাটের কারণে বদরখালী সমিতি পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ এর ৭ ধারার আলোকে পরিবেশ ও প্রতিবেশের যতেষ্ট ক্ষতিসাধন করেছেন। প্রাথমিকভাবে ক্ষতিসাধন নির্ণয় করা হয়েছে ৩৮ লাখ ৭১ হাজার ৬৮০ টাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বদরখালী সমিতির সমিতির মালিকানাধীন বাজারের পশ্চিম অংশে শত বছরের পুরানো একাধিক গর্ত (বর্ধিত খাই জায়গা) রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষাকালে বাজারের বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পশ্চিম অংশের ওই গর্ত গুলোতে জমাট হয়। ক্রমান্নয়ে তা পশ্চিম অংশের সাগর চ্যানেলে নেমে যায়। ফলে বাজার ও আশপাশ এলাকা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত থাকে।

সমিতির সভ্যদের মতে, বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পড়ে জমাটের পাশাপাশি সমিতির পক্ষ থেকে খাই গর্তের উল্লেখিত পরিমাণ জায়গা প্রতিবছর নিলামের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ডাককারীকে মৎস্য চাষের জন্য ইজারা দেয়া হয়।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে উল্লেখিত পরিমাণ খাই গর্তের জায়গা দুইবছর (২০১৮ ও ১৯ সালের জন্য) মেয়াদে ১৬ লাখ ১০ টাকা সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে সমিতির সভ্য বদিউল আলম মানিক নামে একজনকে ইজারা দেয়া হয়েছে। ডাককারী মানিক সেই সময় সমিতির কাছে ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা রিসিটমূলে পরিশোধ করে যথারীতি মৎস্য চাষও শুরু করেছেন।

নিলাম ডাককারী ইজারাদার বদিউল আলম মানিক বলেন, দুইবছর মেয়াদে আমি উল্লেখিত খাই গর্তের জায়গা সমূহ মৎস্য চাষের জন্য সমিতির কাছ থেকে ইজারা নেই। প্রথম বছর আমি সমিতির কাছে ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করে চাষও শুরু করি। এখনো মেয়াদ শেষ হতে আমার আরও একবছর দুইমাস সময় অবশিষ্ট আছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার ইজারা মেয়াদ শেষ হতে সময় থাকলেও দেখি মৎস্য চাষের ওই খাই গর্তের জায়গায় মেশিন বসিয়ে মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। ওইসময় আমি বিষয়টি সমিতির সভাপতি সম্পাদকের কাছে নালিশ করি। কিন্তু তাদের কাছে কোন ধরণের প্রতিকার পাইনি।

এ অবস্থায় বিষয়টি জনস্বার্থের বিপরীত হওয়ায় জলাধার ভরাটের এ ঘটনায় স্ব-উদ্যোগী হয়ে সমিতির সভ্য রিদুয়ানুল হক ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের পর গতবছরের অক্টোবর মাসে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরে পরির্দশক মো.মুমিনুল হক। পরবর্তীতে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পরিবেশ অধিদফতরে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালকের কাছে।

জানা গেছে, পরিবেশ অধিদফতরে তদন্ত প্রতিবেদনের পরও বিষয়টির আলোকে ফের সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন। এরই আলোকে চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বালু উত্তোলন পূর্বক জলাশয় ভরাটের বিষয়টি সত্যতা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালকের কাছে।

অভিযোগটি দায়ের করার প্রায় ছয়মাস পর তদন্তে ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ায় রবিবার পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন জলাধার ভরাটে অভিযুক্ত সমিতির সভাপতি সম্পাদকসহ তিনজনকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন