বরকলে বন্যায় প্লাবিত ১৮টি গ্রাম, পানিবন্দি কয়েক হাজার পরিবার
এক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে গিয়ে রাঙামাটির বরকল উপজেলার ১৮টি গ্রাম, স্কুল ঘর হোস্টেল ও হাট বাজার রাস্তাঘাট ব্রীজ কালভার্ট ক্ষেত খামার রিংওয়েল ও টিউবওয়েল গুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বন্দি হয়েছে ৩ হাজারের অধিক পরিবার।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে প্রবল স্রোতের কারনে মালামাল নিতে না পারায় দূর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রিও বিতরন করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলায় নির্দিষ্ট কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় গৃহ হারা লোকজন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি, স্কুলঘর, মন্দির মসজিদ ও পাহাড়ের উঁচু স্থানে টাবু টাঙিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
জানা যায়, সীমান্তের পাড়ে ও নদীর পাড়ে বসবাস করা লোকজন বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাদের মধ্যে, সীমান্তবর্তী আন্দার মানিক বাজার, খুব্বাং বাজার, ঠেগামুখ বাজার, শ্রীনগর বাজার, কুকিছড়া বাজার, ভালুক্ক্যাছড়ি গ্রাম, তাগলকবাগ গ্রাম, ছোটহরিনা বাজার জুনোপহর উচ্চ বিদ্যালয়ের হোস্টেল, খুব্বাং নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ঘর, আমতলা, ভুষনছড়া বাজার, এরাবুনিয়া বাজার, বড়কুড়াদিয়া সরকার পাড়া, বামল্যান্ড গ্রাম, কলাবুনিয়া বাজার ও গ্রাম, বরকল সদরের চাইল্যাতুলি গ্রাম, হাসপাতাল এলাকা বাজারের আশে পাশের বসতবাড়ি বরুনাছড়ি, পাকমোড়, নন্দছড়া,উদান ছাদরা,জাঙ্গিয়াছড়া উত্তর এরাবুনিয়া আইমাছড়ামূখ ও বিলছড়া এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, গত বছরের চাইতে এ বছর বেশী পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তের পাড়ে ও নিম্ন স্থানে বসবাসকারী পরিবার গুলোর ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রায় ৩ হাজারের অধিক পরিবার পানি বন্দি হয়েছে। টিউবওয়েল ও রিংওয়েল গুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় খাবার পানির তিব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আর অন্য দিকে শুকনা খাবারেরও সংকট দেখা দেওয়ায় অনেক পরিবার অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন।
রাস্তাঘাট ব্রীজ কালভার্ট গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এক ইউনিয়ন থেকে এক ইউনিয়ন ও এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতি মধ্যে কয়েকটি এলাকায় ভূমি ধ্বস হয়ে প্রানহানি না ঘটলেও কয়েকটি বাড়ি চাপা পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে ভুষণছড়া ইউনিয়নের বড় উজ্জ্যাংছড়ি গ্রামের বিজু রাজ চাকমা নামে একজন ষাটোর্ধ বৃদ্ধ স্রোতের পানিতে ভেসে গিয়ে মারা গেছে। অবিরাম বৃষ্টিতে পাহাড়ের ঢালে টাবু টাঙিয়ে যেসব পরিবার বসবাস করছে তারা সব সময় ভূমি ধ্বসের আশংকায় চরম আতংকের মধ্য রয়েছেন বলে চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া পারভীন জানান, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থদের আপাতত খাদ্য শষ্য ও শুকনা খাবারের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানরা এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে এসব ত্রান বিতরন করবেন।