বাইশারীতে নজির হত্যা মামলার বাদীকে উড়ো চিঠি দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি

বাইশারী প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের করলিয়ামুরা গ্রামে গত ২৬ আগস্ট ২০১৭ রাত ৮টা দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি ছুরি আঘাত করে নজির আহামদ (৭০) নামের এক বৃদ্ধকে হত্যা করে। হত্যার ২ মাস ১৩দিন পার হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত মামলার কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে বাদীর পরিবার অতঙ্কে দিনযাপন করছিল।

বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) সকালে নজির আহামদের পুত্র মো. মিজানুর রহমান ফজরের নামাজ পড়ার জন্য দরজা খুলে দেখতে পায় পলিথিনের মোড়ানো এক উড়ো চিঠি। চিঠি পেয়ে তিনি বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আবু মুসাকে ঘটনাটি মোবাইল ফোনে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বলে জানান।

বৃদ্ধ নজির আহামদকে বান্দরবানের বাইশারী ইউনিয়নের করলিয়ামুরা গ্রামে হত্যা করা হলেও তার সন্তানদের বাড়ি পাশ্ববর্তী রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের করলিয়ামুরা গ্রামে। তাই বিষয়টি ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্পে ইনচার্জ মো. হাসেম ও এএসআই মোর্শেদ আলমকে অবহিত করেছেন।

এ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঈদগড় সাংবাদিক ও লেখক পরিষদের প্রধান কার্যালয়ে ৯ নভেম্বর বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটের সময় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে মৃত নাজির আহামদের বড় ছেলে হেলাল উদ্দিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন ৯ নভেম্বর ভোরে ফজরে নামাজ পড়ার জন্য উঠে দরজা খুলে দেখতে পায় একটি উড়ো চিঠি।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার নং- জিআর ৯/০১৭ইং তারিখ মামলার বাদি আমেনা খাতুনকে জানাইতেছি যে, আপনার স্বামী নজির আহামদের মৃত্যুর পর আপনি যে থানায় মামলা করিয়াছেন সে মামলা আপনি ১/২ মাসের মধ্যে তুলিয়া নিতে হবে। না হলে আপনার ছেলেসহ পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হবে। আর এ খবর যেন পুলিশ প্রশাসনকে না জানানো হয়। তাছাড়া আমাদেরকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। যদি না পারেন তাহলে মামলা তুলে নিয়ে মিমাংশা করতে হবে।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, পুলিশ আমাদের হাতে, পুলিশ নিয়ে আমাদের কিছু করতে পারবে না। আমেনা খাতুন আপনি আপনার স্বামীর দিকে তাকান কিভাবে কুপিয়ে মৃত্যু হয়েছে। তোমাদেরও মৃত্যু হবে সেভাবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, পরিবারের সকল সদস্যরা এখন নিরাপত্তা হীনতায়। পুলিশ এ পর্যন্ত কোন ধরনের আসামি গ্রেফতার করছেনা। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় এবং তাদেরকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য গত কিছুদিন আগে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিতভাবে আবেদন করলেও এখনো তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয় নাই।

উল্লেখ্য, উড়ো চিঠিটি বাদী মা আমেনা বেগম, ছেলে হেলাল উদ্দিন, মিজানুর রহমান, নুরুল ইসলামের কাছে পৃথক পৃথক চারটি চিঠি দেওয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন