বান্দরবানে ডিস লাইন ব্যবসায় অনিয়ম: গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে

Satellite dish antennas under blue sky on the background

বান্দরবান সংবাদদাতা:
জরার্জীর্ণ ক্যাবল, সরকারি নিয়মনীতি না মানা, মনগড়া ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বান্দরবানে ডিস লাইন গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। জেলা সদরে ডিস লাইন দ্বারা সরকারি-বেসরকারি টিভি চ্যানেল প্রদর্শনের ব্যবস্থা শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। গ্রাহক প্রতি মাসিক ডিস লাইনের ফি ২০০ টাকা হারে আদায় করা হয়। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কমপক্ষে ৫০টি চ্যানেল থাকার কথা, বিটিভিসহ দেশি চ্যানেল অগ্রাধিকার আর নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ থাকতে হবে। কিন্তু বান্দরবান ডিস লাইন ব্যবসায়ীরা সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবসা পরিচালনা করে গ্রাহকদের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। বান্দরবানে ৩০-৪০টি চ্যানেল রয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটছে।

বালাঘাটার মো. হারুন, মধ্যম পাড়ার মংপু মার্মা, আর্মি পাড়ার মোঃ মফিজ হাওলাদার, রাজার মাঠ এলাকার ননী দাশ, ক্যাং এলাকার উমে চিং মার্মা জানিয়েছেন, টিভিতে অনুষ্ঠান চলতে চলতে হঠাৎ চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায় অথবা চ্যানেল পরিবর্তন হয়ে যায়। তাতে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান অথবা সংবাদ দেখা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এমনকি সরকারি কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘোষনা জানতে পারা থেকেও বঞ্চিত হয়। একটি চ্যানেল সকালে ১ নাম্বারে, ১ ঘন্টা পর ৩ নাম্বারে, ৩ ঘন্টা পর ১৩ নাম্বারে এভাবে পরিবর্তন হতে থাকে সারাদিন। দর্শকরা চ্যানেল টিউন করতে করতে অনেকসময় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। জাতীয় সংসদ অধিবেশন বিটিভিতে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই ভোগান্তিতে পড়তে হয় দর্শকদের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ ডিস লাইনের ক্যাবল সংস্কার করা হয়না। জোড়া তালি দিয়ে কোন রকমে লাইন চালু রেখে গ্রাহকদের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ডিস ব্যবসায়িরা।

তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গ্রাহকদের জিম্মি করে রেখেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বান্দরবানে শুধুমাত্র দুইজন ব্যবসায়ি ছাড়া অন্য কেউ এ ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। উন্নত সেবা, ভালো ব্যবহার ও সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ডের খবর যথাযথ ভাবে প্রদর্শনের জন্য গ্রাহকেরা ডিস ব্যবসায়িদের অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা যেন তেন ভাবে দিনের পর দিন তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ডিস ব্যবসায়ি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বান্দরবানে সীমিত সংখ্যক গ্রাহক থাকার কারণে বেশি পুঁজি দিয়ে পে-চ্যানেলসহ যাবতীয় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারনেই কিছু সমস্যা প্রতিনিয়ত থেকেই যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি শিঘ্রই আরো কিছু পে-চ্যানেল এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহক সেবার মান উন্নত করার। আশা করি আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ সেবা আরো উন্নত হবে।

এ ব্যাপারে বান্দরবানে ডিস লাইন সংযোগ এর জনদূর্ভোগ সমূহ তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ডিস লাইন গ্রাহকরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন