বিশালাকার ঝর্ণা আর জলপ্রপাতে ভরপুর পর্যটন সম্ভাবনাময় এক উপজেলার নাম দীঘিনালা

dighinala-pic-26-09-2016-copy

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

সবুজে ঘেরা পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় যতগুলো বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে তাতে করে পর্যটন এলাকা ঘোষনা করা যেতে পারে। পর্যটন এলাকা ঘোষনা হলে এলাকায় বিভিন্ন পর্যটকের আগমন ঘটবে। রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন হবে। এলাকায় অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। সর্বোপরি পর্যটন এলাকা ঘোষনা হলে পুরো চিত্র পাল্টে যাবে উপজেলার।

জানা যায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। একদিকে পাহাড়ি জুমের নজরকাড়া দৃশ্য অপরদিকে রয়েছে তইদুছড়ায় ঝরনা, জলপ্রপাত, শুকনা ছড়া ঝরনা, হাচিনসনপুর ঝুলন্ত ব্রীজ, দীঘিনালা বন বিহার, ডেসটিনির মনোরম বাংলো, তৎকালিন ত্রিপুরা রাজ্যের বনবাসী রাজা গোবিন্দ মানিক্য বাহাদুর ত্রিপুরা ঐতিহ্যবাহী দীঘি এবং বসু ফ্রটস ভ্যালী’র মতো বিভিন্ন বিনোদন স্পট। এছাড়া এ উপজেলার পাশেই রয়েছে রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক পর্যটন এলাকা। সাজেক রাঙ্গামাটিতে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোই দীঘিনালা উপজেলার উপর দিয়ে। এগুলো নিয়ে রয়েছে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠার ব্যাপক সম্ভাবনা।

দীঘিনালায় তিনটি বিশালাকার ঝরনা এবং জলপ্রপাত সন্ধানের পর পর্যটকে ভরপুর হয়ে উঠেছে বিনোদন স্পটগুলি। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে পর্যটকের সংখ্যা। কিন্তু দিন দিন পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও সুযোগ সুবিধা বাড়েনি। পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার মত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকার পরও  এ উপজেলাকে পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা হয়নি। তাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খাগড়াছড়ি সদরে গিয়ে থাকা খাওয়াসহ রাত্রিযাপন করতে হয়।  এতে করে পর্যটকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তারপরও পর্যটকরা ছুটে আসছে দীঘিনালা উপজেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. মোহতাম, রুবেল, মিঠু জানান, প্রথমে আমরা সাজেক গিয়েছি। সেখান থেকে ফেরার পথে দীঘিনালার ঝরনা ও জলপ্রপাত দেখতে এসেছি, কিন্তু এখানে ভালো থাকা খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়েই ২০ কিলোমিটার দুরে খাগড়াছড়ি সদরে থাকতে যেতে হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক জানান, পর্যটন এলাকা ঘোষনার জন্য সবই রয়েছে দীঘিনালা উপজেলায়। সারা দেশের কোথাও এতগুলো ঝরণা, জলপ্রপাত একসাথে নেই। খুব কম খরচে একসাথে সব গুলো ঝরণা এবং জলপ্রপাত ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া সাজেকগামী পর্যটকদের এ উপজেলার উপর দিয়েই যেতে হয়। তাই প্রতিদিনই বাড়ছে পর্যটক।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ কাশেম জানান, দীঘিনালা উপজেলাকে পর্যটন এলাকা ঘোষনা করা হলে সারা বছরই পর্যটকে মুখরিত থাকবে, এতে করে একদিকে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব পাবে, অপরদিকে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হবে, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। দীঘিনালা উপজেলাকে পর্যটন এলাকা ঘোষনা করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস। তাই এই পর্যটন দিবেসে উপজেলাবাসীর দাবী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে কাজে লাগিয়ে শীঘ্রই যেন দীঘিনালাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে নজর দেন কর্তৃপক্ষ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন