‘বয়স আমার ৪৬ নয় তবে বাড়ি গোপালগঞ্জ’

পার্বত্য ডেস্ক:

বর্তমানে এপার ও ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। বছরের বেশিরভাগ সময়েই কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বেশ। সম্প্রতি জয়া অভিনীত বিরসা দাশগুপ্তের ‘ক্রিসক্রস’ চলচ্চিত্রের টিজার ও গান মুক্তি পেয়েছে।

কিন্তু ইদানীং বয়সের ভুল তথ্য প্রচার নিয়ে বেশি ভাবাচ্ছে এই অভিনেত্রীকে।

শুধু তাই নয়, জয়ার পারিবারিক তথ্যও ভুলভাবে গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন এই অভিনেত্রী। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমে নিজের বয়স ও পারিবারিক বিষয় নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার না করার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়েছেন জয়া।

আর এ নিয়ে মঙ্গলবার (১০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি।

ওই স্ট্যাটাসে জয়া লিখেছেন- ‘বিরসা দাশগুপ্তের ‘ক্রিসক্রস’ চলচ্চিত্রের টিজার ও গান মুক্তি পেল। অপ্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছি আমরা। ভালো হোক কিংবা মন্দ- আমার অভিনীত চলচ্চিত্র কিংবা আমার কাজ নিয়ে বেশিরভাগ চলচ্চিত্র দর্শকই গুরুত্বের সঙ্গে মতামত দেন। কখনও আমার কাজ আমার ভক্তদের গর্ব বাড়িয়ে দেয়, কখনও আমি তাদের হতাশ করি।

তবে যারা আমার কাজ অপছন্দ করেন কিংবা যারা আমাকে অপছন্দ করেন, তাদের আমি অপছন্দ করি না। বরং তাদের ব্যাপারে আমি আরও অনেক বেশি যত্নশীল। গঠনমূলক সমালোচনাই তো একজন শিল্পীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। আমি আমার অভিনয় জীবনে বরাবরই সমালোচকদের দেখানো পথে চলার চেষ্টা করেছি। তবে শুধু ‘বলার জন্য বলা’ নেতিবাচক মন্তব্য কখনও আমার ভেতর প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে আমি নির্ভার।’

জয়া লিখেছেন- ‘তবে ইদানীং ২/১টি বিষয় আমাকে কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে ইদানীং বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা/উইকিপিডিয়ার তথ্যসূত্র টেনে আমার বয়স নিয়েও বেশ চর্চা করছেন। বলা হচ্ছে- আমার বয়স নাকি ৪৬ বছর! গুজব-গুঞ্জন আমি বরাবরই খাবারের লবণের মতো উপভোগ করে গেছি। দুয়েকজন সমবয়সী কিংবা আমার চেয়ে বয়সে বড় শ্রদ্ধাভাজন সহকর্মী (বিশেষ করে বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী) গণমাধ্যমে নিজেদের অধিকার মনে করে আমার বয়স (ভুল তথ্য) নিয়ে চর্চা করেছে- বিষয়টি মজার। তাই এতদিন উপভোগ করেই গেছি। তবে খুব সম্ভবত আমার চুপ থাকাটাকে অনেকে ‘মৌনতা সম্মতির লক্ষণ’ হিসেবে ধরে নিয়েছেন। নিন্দুকেরাও ‘অস্ত্র’ হিসেবে আমার বয়সের ভুল তথ্য প্রচার করে আনন্দ পাচ্ছেন।’

একজন ‘শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় তার কাজে’ বলে মনে করেন জয়া। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমি প্রথম ও শেষবারের মতো সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই- বয়স নয়, একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত তার কাজে।

জয়া আরও বলেন, ‘৪৬ কিংবা ৫৬ কিংবা তার চেয়েও বেশি বয়স হলেই অভিনেত্রীরা কাজের অযোগ্য কিংবা তারুণ্যদীপ্ত চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না- এমন ধারণা বিশ্বের কোনো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিজই পোষণ করেন না। তাই ব্যক্তি জয়া আহসানের যে বয়স, তা নিয়ে আমি এতটুকু বিচলিত নই।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন- ‘ভুল তথ্য প্রচার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার উদ্দেশ্যে অনুরোধ করছি। বিশেষ করে আমার কাজ যারা পছন্দ করেন, দায়িত্বশীল যেসব সাংবাদিক আমাকে নিয়ে দু’কলম লেখার মতো যোগ্য মনে করেন, তারা ভবিষ্যতে বিষয়টি সংবেদনশীলভাবে দেখবেন বলেই আশা করছি।

কারণ, প্রকৃত সত্য হল- ৪৬ বছর আগে আমার বাবা-মায়ের বিয়ে তো দূরের কথা, দেখাও হয়নি। এতদিন বিষয়টি হেসেই উড়িয়ে দিয়েছি। তবে ইদানীং বিষয়টি মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করায় পরিবার ও কাছের বন্ধুদের অনুরোধে লিখতে বাধ্য হয়েছি।

সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ, একজন শিল্পীর জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরার আগে ন্যূনতম একবার তার সঙ্গে কথা বলা উচিত। কারণ শুধু বয়স ভুলের তথ্যই নয়, বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, আমার আরও দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে (প্রকৃত তথ্য: আমরা দুই বোন ও এক ভাই)। বলা হয়, আমার বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায় (প্রকৃত তথ্য: গোপালগঞ্জ)।

শুধু তাই নয়, আমার বাবার নামও লেখা হয় আলী আহসান সিডনী (প্রকৃত তথ্য: অভিনেতা জিতু আহসানের বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা সৈয়দ আহসান আলী সিডনী। আমার বাবা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এএস মাসউদ)। রয়েছে আরও অনেক ভুল তথ্য। আশা করছি ভুল শুধরে ভবিষ্যতে আমরা প্রতিটি শিল্পী সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করব। কারণ ভক্তরা যেমন তার পছন্দের শিল্পী সম্পর্কে ভুল তথ্য কিংবা ভুল ব্যাখ্যা পড়তে পছন্দ করেন না, শিল্পীরাও প্রতিনিয়ত ভুল তথ্য দিয়ে ভক্তদের বিভ্রান্ত করতে চান না।

সাংবাদিক ভাইদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানিয়ে জয়া বলেন, ‘একজন অভিনেতার কাজ নিয়ে লেখার সময় যদি তার বয়সের বিষয়টি না আসে, একজন অভিনেত্রীর ক্ষেত্রেও সে বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিকভাবে আসাটা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে কিন্তু আমাদের ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে। সবার জন্য রইল শুভ কামনা।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন