মানিকছড়িতে চোর সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

মানিকছড়ি প্রতিনিধি:
মানিকছড়িতে একই এলাকায় ও একই রাতে সাংবাদিক ও সরকারি চাকুরীজীবির মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তৃণমূলে তোলপাড় হলেও পুলিশ ও নেতাদের অবস্থান ভিন্ন! ওই ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক চার বখাটে যুবককে আটক করলেও অদৃশ্য কারণে তাদেরকে ছাড়িয়ে নিয়েছে রাজনৈতিক নেতারা! ফলে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

সচেতন মহল বলছেন, তাহলে কী প্রতিবারের ন্যায় এবারও চোর চক্রটি পার পেয়ে যাবে! আর কতটি গাড়ী চুরি হলে সংঘবদ্ধ চক্রটিকে ধরতে কিংবা শনাক্ত করতে পারবে পুলিশ?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। গত ৫/৭ বছরে এ উপজেলা থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক মোটর সাইকেল চুরি হলেও গাড়ী উদ্ধারের নজির নেই! এছাড়া গত ১৮ দিনে একই এলাকা হাজীপাড়া থেকে ৫টি গাড়ী চুরি হয়েছে! ফলে এখানে গড়ে উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ছায়াস্থল।

সম্প্রতিকালে এখানে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন চালু হওয়াতে বর্তমানে দেড় সহস্রাধিক যুবক এ পেশায় জড়িত। এছাড়া এখানে দু’শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মোটরসাইকেল ব্যবহার করছে। ফলে গাড়ী চুরির উর্বর মাঠে সংঘবদ্ধ চক্রটি ঘুরে-ফিরে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে! গত আড়াই মাসে থানা ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন হাজীপাড়া থেকে সাতটি মোটরসাইকেল অনায়াসে চুরি হয়েছে। আর এসব ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরাও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী! সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর দৈনিক সমকালের উপজেলা প্রতিনিধি মো. মনির হোসেনের হাজীপাড়াস্থ বাসার গ্রিল এবং উপজেলা কোয়ার্টার থেকে গ্রিল ভেঙ্গে সরকারি চাকুরীজীবি যুগেশ চাকমা ওরফে বিন্দু চাকমার মোটর সাইকেল নিয়ে যায় চুরের দলেরা।

এ ঘটনায় সাংবাদিক মো. মনির হোসেন অজ্ঞাতনামাদের আসামী দিয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ তাৎক্ষণিক বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সন্দেভাজন ৪ বখাটে যুবককে আটক করলেও সন্ধ্যার আগেই পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দিতে হয়েছে! আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপের কারণে ওদেরকে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদও করতে সাহস পায়নি পুলিশ!  অন্যদিকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। একের পর এক এ ধরণের ঘটনার পর পুরো এলাকায় চোরাতংক  বিরাজ করছে।

এ প্রসঙ্গে মানিকছড়ি থানার ও.সি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এখানের অধিকাংশ গাড়ীর ডকুমেন্টপত্র নেই। ফলে কোন গাড়ী চুরি হলে কেউ মামলা করতে আসে না। এ ঘটনায় সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ সন্দেহভাজন ৪ ব্যক্তিকে আটক করে। কিন্তু তাদের কাছে কোন তথ্য না পাওয়ায় এবং নেতাদের সুপারিশের কারণে আটক ব্যক্তিদের ওপর পুলিশের নজরদারী থাকবে শর্তে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়া মাত্র তাদের গ্রেফতার করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন