মানিকছড়ি ইউসিসি’র নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে বিআরডিবি অফিসে তালা

মানিকছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি বিআরডিবি (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড) অধীনস্থ সমিতির(ইউসিসি লি.) মেয়াদ শেষে নতুন নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে পুরাতন চেয়ারম্যানকে আবারও চেয়ারম্যান ঘোষণা করায় সমিতির বিক্ষুব্ধ লোকজন ২৩ অক্টোবর দুপুরে বিআরডিবি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ লোকজন সরে গেলে পুলিশ তালা খুলে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বিআরডিবি অফিস ও ইউসিসিলি. সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড(বিআরডিবি’র) মানিকছড়ি অফিসের আওতাধীন ৭৪টি সমিতি রয়েছে। এদের মধ্যে ঋণ খেলাপীসহ নানা কারণে ৩৯টি সমিতি অকার্যকর। বাকী ৩৫টি সমিতির কার্যক্রম তদারকি করেন ইউসিসি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান। যিনি সমিতির প্রতিনিধিদের দ্বারা ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
২ অক্টোবর-২০১৪ ইং সালে ইউসিসি লি.এর নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এস.এম. আনোয়ার হোসেন। যার মেয়াদ গত ১ অক্টোবর ২০১৭ শেষ হয়। কিন্তু বর্তমান বিআরডিবি কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ বিআরডিবি’র নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এবং কাউকে না জানিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম আনোয়ার হোসেন এর সাথে আঁতাত করে আবারও তাকে বিনা ভোটে, বিনা আয়োজনে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে দায়িত্ব অর্পণ করেন!
বিষয়টি এত দিন গোপন থাকলেও ২৩ অক্টোবর সোমবার সকালে সেটি জানাজানি হলে দুপুর নাগাদ অর্ধশতাধিক সমিতির সদস্য বিষয়টি জানতে বিআরডিবি অফিসে আসেন। এ সময় তারা বিআরডিবি কর্মকর্তাকে না পেয়ে অফিস সহকারী ও ইউসিসিলি. চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্দ লোকজন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়! অবস্থার বেগতিক টের পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন ও সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন। পরে তারা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিআরডিবি’র জেলা কর্মকর্তাকে জানালে তাঁরা এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ লোকজন অফিস এলাকা ত্যাগ করেন। পরে পুলিশ অফিসের তালা খুলে দিলে ইউসিসিলি.চেয়ারম্যান, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য স্টাফরা স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করেন।
নির্বাচন পদ্ধতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে অসুস্থতার কারণে ছুঁটিতে থাকা বিআরডিবি কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ জানান, পূর্বের ইউসিসিলি. এর মেয়াদ শেষে নিয়মানুযায়ী সবকিছু সম্পন্ন করে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাসস সংশ্লিষ্টদেরকে নির্বাচন সমপন্ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তাঁরা ঘোষিত তফসিলে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাউকে না পাওয়ায় পুরাতন কমিটিকে আবারও বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এতে নিয়মের ব্যতয় ঘটেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা বলেন, নিয়মানুযায়ী ইউসিসিলি. নির্বাচনে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই উপজেলা সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করার কথা। কিন্তু বর্তমান বিআরডিবি কর্মকর্তা এ বিষয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে তফসিল ঘোষণাসহ সব কিছু সম্পন্ন করেছে! ফলে আজ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনাক্রমে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
জেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা(উপ-পরিচালক) মো. আবদুল মালেক জানান, এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখাসহ জড়িত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন