মায়ের জন্য কেনা মিষ্টি ও মোবাইল ফোন মিলল ধীরাজের লাশের পাশে
নিজস্ব প্রতিবেদক,খাগড়াছড়ি:
টেক্সটাইল প্রকৌশলী ধীরাজ চাকমা। এ ঈদের বন্ধেই তার বিয়ে হওয়ার কথা। পাত্রী ঠিক ছিল। কিন্তু পরিবারের সে স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তদের একটি বুলেট। কথাগুলো বিলাপ বলছিল ধীরাজ চাকমা মা ফুল কুমারী চাকমা।
ধীরাজ চাকমার বাড়ী পানছড়ির উগলছড়িতে। কর্মস্থল ছিল কুষ্টিয়ায়। শুক্রবার রাতে নৈশকোচে করে ঢাকা হয়ে বাড়ী ফিরছিলেন। দীর্ঘদিন পর বাড়ী ফিরছে তাই মায়ের জন্য একটি মোবাইল ফোন সেট ও মিষ্টি কিনেছেন ধীরাজ চাকমা। ভোর পৌনে ৭টার দিকে মাটিরাঙা পৌছে মায়ের সাথে কথা হয়েছে। মাকে বলেছিল, বাসা পৌছে নাস্তা করবে। হয়তো আর এক ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যেত। কিন্তু না, তার বিধি বাম। ধীরাজ ফিরেছে লাশ হয়ে।
শনিবার বিকালে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের সামনে বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন, ধীরাজ চাকমার মা ফুল কুমারী চাকমা। শনিবার সকালে স্বনির্ভর বাজারে পড়ে ছিল ধীরাজ চাকমার নিথর দেহ। পাশে পড়ে ছিল মিষ্টি,মোবাইল ফোন সেটের প্যাকেট ও ব্যাগ।
ফুল কুমারী চাকমা জানান, ধীরাজ চাকমা ছিল শান্ত স্বভাবে। ছিল মেধাবী। বিড়ি-সিগারেটসহ কোন ধরনের নেশা পান করতো না। জানা গেছে, নৈশ কোচ থেকে নেমে টমটমে করে স্বনির্ভর বাজারে পৌছে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছিলেন ধীরাজ চাকমা। আকস্মিভাবে সন্ত্রাসীদের ভারী অস্ত্রের গর্জনে কেঁপে উঠে পুরো স্বনির্ভর এলাকা। কিছু বুঝার আগেই সন্ত্রাসীদের একটি বুলেট বিদ্ধ হয় ধীরাজ চাকমার শীরেরে। নিভে যায় ধীরাজের প্রাণ প্রদীপ। শেষ হয়ে যায় তার পরিবারের সব স্বপ্ন।
ইতিপূর্বেও পাহাড়ে আঞ্চলিক রাজনীতির শিকার হয়েছে বহু মেধাবী মানুষ। খালি হয়েছে বহু মায়ের বুক। তার পর ফুল কুমারী চাকমার বক্তব্য আমি ছেলে হত্যা বিচার চাই না। তবে রাষ্ট্রের কাছে গ্যারান্টি চায় আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয়। বন্ধ হোক মানুষ মারার অপরাজনীতি।