Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবরোধ, ভ্রমণ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ‘টার্গেটেড’ অবরোধ আরোপ করা উচিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট দেশের। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতি নিধন বন্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেয়া উচিত। জব্দ করতে হবে সেনা কমান্ডার সহ নৃশংসতায় জড়িত সবার সম্পদ। এক্ষেত্রে শুধু জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করলে হবে না। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

মিয়ানমারে নৃশংসতায় দায়ীদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ডিজাইনেটেড ন্যাশনালস (এসডিএন) তালিকায় নিতে হবে। একই পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্যদের। ১৭ সেপ্টেম্বর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

এতে বলা হয়, ২৫ শে আগস্ট আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গণহারে অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা, লুটপাট, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। বিশ্ব নেতারা নিউইয়র্কে সমবেত হয়েছেন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে।

আজ সোমবার এ অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মিয়ানমার সঙ্কটকে এজেন্ডায় অগ্রাধিকার দেয়া উচিত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে। একই সঙ্গে চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে হবে। যাদের কাছে সহায়তা পৌঁছানো খুবই জরুরি তাদের কাছে মানবিক সহায়তায় পাঠানোতে বাধা দেয়ার নিন্দা জানাতে হবে। আরো কড়া আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

তারা বলেছে, আরো জরুরি ভিত্তিতে এসব নৃশংসতার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। তাদের সম্পদ জব্দ করতে হবে। কার্যকর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা ও আর্থিক বিনিময়ের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক জন সিফটন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতি নিধন চালাচ্ছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। এখন সময় এসেছে আরো কঠোরতা আরোপ করা, যা এড়িয়ে যেতে পারবেন না মিয়ানমারের জেনারেলরা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরো বলেছে, দুর্গত মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার জন্য এ সংক্রান্ত এজেন্সিগুলোকে প্রবেশাধিকার দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো উচিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের। দাবি জানাতে হবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে মিয়ানমারের ভিতরে নৃশংসতা তদন্তের অনুমোদন দিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় ঘরে ফেরার সুযোগ দিতে।
এক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যদের প্রতিক্রিয়া জানতে উন্মুক্ত আলোচনা করতে পারে। তাতে আমন্ত্রণ জানানো জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাঁকে, যাতে তিনি রাখাইন সঙ্কট নিয়ে ব্রিফ করতে পারেন। এ সঙ্কটকে জাতি নির্মূল হিসেবে আখ্যাযিত করেছে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের হাই কমিশনার।

যারা মারাত্মক নৃশংসতা ঘটিয়েছে তাদেরকে দায়ী করে বিচারের আওতায় আনা, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের বিষয়টি আলোচনায় আনা উচিত পরিষদের। মিয়ানমারের মানবিক সঙ্কট ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে থেকে সময় নষ্ট করা উচিত নয় সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর। তাদের উচিত মিয়ানমারে নৃশংসতার জন্য নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা ও তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা। সব রকম সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি, সহায়তা, সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে।

বিশেষ করে কমান্ডার ইন চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং সহ মিয়ানমারের সিনিয়র নেতৃত্ব যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ডিজাইনেটেড ন্যাশনালস (এসডিএন) তালিকায় আনা উচিত। এই তালিকায় যারা থাকে তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সুবিধা দেয়া হয় না। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ জব্দ করা হয়। একই রকম অর্থনৈতিক ও ভ্রমণ বিষয়ক অবরোধ আরোপ করা উচিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্য দেশগুলোর। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিদ্যমান ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো উচিত। একই সঙ্গে সব রকম সামরিক সহায়তা বন্ধ করা উচিত। জাপান, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া সহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর একই রকম পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

জন সিফটন বলেছেন, যদি প্রকৃত অর্থনৈতিক করুণ পরিণতি নেমে আসে তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে মিয়ানমারের সিনিয়র সামরিক কমান্ডাররা মনোযোগী হতে পারে। এতে যারা জাতি নির্মূল করছেন তাদের ওপর প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ স্যাটেলাইটে পাওয়া বেশ কিছু ছবি বিশ্লেষণ করেছে। তাতে দেখা গেছে কমপক্ষে ২২০টি রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ২৫ আগস্ট থেকে ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা গ্রামবাসী বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গ্রামগুলোতে লুটপাট চালাচ্ছে। তারপর তারা বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে মিয়ানমার সরকারের অভিযোগ, আরসা যোদ্ধারা ও রোহিঙ্গা গ্রামবাসী এসব অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী। তবে এর পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারে নি। যদি আরসার কোনো কমান্ডার বিশ্বাসযোগ্য কোনা নৃশংসতা ঘটিয়ে থাকে এবং তা প্রমাণ হয় তাহলে তাদেরকেও অবরোধের আওতায় আনা উচিত।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন