মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না রোহিঙ্গারা

বাইশারী প্রতিনিধি:

বহুল প্রতীক্ষিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুতেই হোচট খেয়েছে। মিয়ানমারে ফেরত যেতে বাঁছাই করা রোহিঙ্গাদের আনতে গাড়ি নিয়ে গেলে বাধে বিপত্তি। নানা শ্লোগান দিয়ে তারা মিয়ানমারে ফিরবেনা মর্মে জানান দেয়।

পুটিবনিয়া ক্যাম্পে বিক্ষোভরত রোহিঙ্গারা আরআরআরসি কমিশনার আবুল কালামকে বহনকারী গাড়ি আটকিয়ে দিলে ক্যাম্প থেকে দ্রুত সটকে পেড়েন তিনি।

জানা গেছে, এমন টেকনাফের উনচিপ্রাং পুটিবনিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসন বিরোধী বিক্ষোভ করেন। তারা ‘ন যাইয়ুম ন যাইয়ুম’ (যাবো না, যাবো না) স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। ঐ ক্যাম্প থেকে আগামী তিন দিনে প্রত্যাবাসিত হওয়ার জন্য ২৯৮ জন রোহিঙ্গার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের জানানো হয় যে তাদের জন্য অন্তত তিনদিনের খাবার দাবার ও জরুরি প্রয়োজন দ্রব্যাদিসহ বাসে করে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছ। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়। এরপর তাদের বাসে ওঠার আহ্বান জানালে ‘যাবো না’ বলে স্লোগান দেওয়া শুরু করে তারা। বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় কয়েকজনের হাতে প্লাকার্ড দেখা যায়। যেখানে তারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রদান, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।  প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য যেসব পরিবার তালিকাভুক্ত ছিল, তাদের কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা নাগরিকত্ব সহ বসত ভিটা ফিরিয়ে দিলে ফিরে যাবে বলে মত প্রকাশ করেছেন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম জানান, তারা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, কিন্তু একজন রোহিঙ্গাও স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে রাজী না।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে রাতের আঁধারে কিছু এনজিও ও ব্যক্তি উনচিপ্রাং ক্যাম্পের ফিরে যাওয়ার তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের ফিরে না যেতে ইন্ধন যুগিয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দুপুর বেলা ১২ টা থেকেই বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের লাল ব্রীজেই অবস্থান নেয় বর্ডার গার্ড ব্যাটেলিয়ন (বিজিবি) সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওপারে বাংলাদেশ সীমানার নিকটে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ( বিজিপি) সেখানে দেখা যায় কিছুক্ষণ পর-পর আরআরআরসি’র কর্মকর্তাদের। তারা কখনো উখিয়ার কুতুপালং টিভি টাওয়ার সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে কখনো ঘুমধুম সীমান্তে। আবার কখনো ক্যাম্পে এভাবে বৃহস্পতিবার পূর্ব নির্ধারিত প্রত্যাবাসন সময় চলে যায়। প্রত্যাবাসন ছাড়া ঘুমধুম সীমান্তের বাংলাদেশ- মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক ছিল ফাঁকা।

রোহিঙ্গা শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গারা না গেলে জোর করে সম্ভব নয়। তবে আজকের মত প্রত্যাবাসন স্থগিত। সরকার শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরু করতে জোর চেষ্ঠা অব্যাহত রাখবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন