মিয়ানমার বর্ষার পূর্বেই ফেরত নেবে শূণ্য রেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদেকে
নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের কাছে ঢেকিবনিয়া বিজিপি ক্যাম্পে বাংলাদেশ-মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান বলেন, উভয় দেশের প্রায় ২৩জন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের মধ্যে সোহাদ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এতে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু কোনারপাড়া শূণ্য রেখা আশ্রিত প্রায় ৭ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরে নেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব রাখলে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল আশ্বস্থ করে বলেছে যেসব রোহিঙ্গারা শূণ্য রেখায় আশ্রয় নিয়েছে তাদের যতদ্রুত সম্ভব ফিরে নেওয়া হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের বাড়ি ঘর পুনঃনির্মাণ বা মেরামত করতে যা যা দরকার তা মিয়ানমার সরকার করবে বলেও সেদেশের প্রতিনিধিদল আশ্বস্থ করেছে।
তবে তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ পারিবারিক তালিকা তৈরি করে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের কাছে প্রস্তাব রাখেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবারে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, মিয়ানমারে এমন কোন পরিবেশ দেখা যায়নি, যাতে রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরে গিয়ে অনিরাপদ জনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন, উভয় দেশের প্রতিনিধিদল শূণ্য রেখায় ঘুরে সেখানে আশ্রিত রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছে তাদের বসতভিটায় বসবাসের নিশ্চিয়তা দিলেই যেকোন মুহুর্তে তারা মিয়ানমারে ফিরে যাবে।
বিভাগীয় কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, প্রত্যাবাসনের আওতাধীন রোহিঙ্গারা ফিরে কোথায় থাকবে। তাদের কি অবস্থা রাখা হবে, ওই সব পয়েন্ট গুলো ঘুরে দেখা হয়েছে। প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের আপাতত থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা মিয়ানমার যা করেছে তা মোটামুটি সন্তোষজনক মনে হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ঘুমধুম লাল ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল তাদের ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। পরে ঢেকিবনিয়া ক্যাম্পে উভয় দেশের প্রতিনিদলের বৈঠক শুরু হয়।
মিয়ানমারে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মংডু টাউনশীপের কমিশনার টং পে লেউই। প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে প্রত্যাবাসনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল বর্ষার আগেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করার তাগিদ দিলে মিয়ানমার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যতদ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বস্থ করেন। এসময় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, বান্দরবান পুলিশ সুপার সনজিৎ কুমার রায়সহ সেনা, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।