মে মাসে তিন পার্বত্য জেলায় অসহযোগ আন্দোলন: সন্তু লারমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, সরকার জুম্মু জাতির আন্দোলন দমিয়ে রাখতে চুক্তি বাস্তবায়নে কালক্ষেপন করছে। এপ্রিলের মধ্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে তিন পার্বত্য জেলায় অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে।
শুক্রবার বান্দরবান জেলা সদরের ফারুক পাড়ায় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের (পিসিপির) ১৬ তম প্রতিনিধি সম্মেলন ও কাউন্সিলর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সন্তু লারমা বলেন, সরকার বলছে চুক্তির বেশীর ভাগ শর্ত বাস্তবায়ন হয়েছে, প্রকৃত পক্ষে চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো সরকার বাস্তবায়ন করে নি। বাস্তবায়নের কথা বলে সরকার কালক্ষেপন করছে, যাতে কৌশলে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যায়। জুম্মু জনগণের অধিকার অদায়ে ও অস্তিত্ত্ব রক্ষার্থে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। পাহাড়ী যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এপ্রিলের মধ্যে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান না হলে ১ মে থেকে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করা হবে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বান্দরবান শাখা সভাপতি মস্তু মার্মার সভাপতিত্বে সম্মেলনে জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, যুগ্ম সম্পাদক কেএস মং মার্মা, জেলা জেএসএস সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিসদের সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টন, রোয়াংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক ক্যবামং মারমা, লয়েল ডেভিট বম, রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান অংথোয়াই চিং মার্মা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি জ্যোতিময় চাকমা, হিল ইউমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী ওয়াইচং প্রু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সন্তু লারমা বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে পার্বত্যাঞ্চলে সেনা শাসন চলছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখনো সেনা কর্তৃত্ব রয়ে গেছে। এখনো অপারেশন উত্তরণ চলছে।
তিনি অভিযোগে করে বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতৃবৃন্দের সহায়তায় বুধবার তার বহরে হামলা চালিয়ে ১০ নেতাকর্মীকে আহত করেছে। হামলার ঘটনার তিব্র নিন্দা জানান তিনি।
পিসিপির ১৬ তম প্রতিনিধি সম্মেলনে বান্দরবান জেলা শাখার উবাচিং মার্মাকে সভাপতি, অজিত তঞ্চঙ্গ্যাকে সাধারণ সম্পাদক ও উখিহ্লা মার্মাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
শুক্রবার পিসিপির ১৬ তম প্রতিনিধি সম্মেলন ও কাউন্সিলর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় সন্তু লারমা ফারুক পাড়ায় যান।
প্রসঙ্গত, পাহাড়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে বুধবার থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচির ডাক দেয় জাগো পার্বত্যবাসী নামের একটি সংগঠন। বুধবার দুপুরে জেলা শহরের বালাঘাটায় জেএসএস-জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ২০ নেতাকর্মী আহত হন।