রাখাইনে নিহত রোহিঙ্গার সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে: জাতিসংঘ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞে’ নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শনকারী জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তারা এ আশঙ্কা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমানের নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘের তদন্ত দলটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, ধর্ষণ চালিয়েছে এবং অগ্নিসংযোগ করেছে।

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলেন, ‘২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে কত সংখ্যক মানুষ মারা গেছে তার হিসেবটা অজানা, তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।

এক বিবৃতিতে তদন্ত দলের প্রধান মারজুকি দারুসমান বলেন, “উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে জবানবন্দি নিয়েছি আমরা। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে অভিযান চালিয়েছে তা ছিল অপরাধের ‘সুপরিকল্পিত ও পদ্ধতিগত’ ধরন। এর মধ্য দিয়ে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার পর ক্লিয়ারেন্স অপারেশন জোরদার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তখন থেকেই মিলতে থাকে বেসামরিক নিধনযজ্ঞের আলামত। পাহাড় বেয়ে ভেসে আসতে শুরু করে বিস্ফোরণ আর গুলির শব্দ। পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামগুলো থেকে আগুনের ধোঁয়া এসে মিশতে শুরু করে মৌসুমী বাতাসে। মায়ের কোল থেকে শিশুকে কেড়ে নিয়ে শূন্যে ছুড়ে দেয় সেনারা। কখনও কখনও কেটে ফেলা হয় তাদের গলা। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় মানুষকে।

জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ইন্টারসেক্টর কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ- আইএসসিজি তাদের রবিবারের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগস্টে সহিংসতা জোরালো হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ছয় লাখ তিন হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ সেনা অভিযানকে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধান ও মানবাধিকার সংস্থা রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তবে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সহিংসতার জন্য পাল্টা রোহিঙ্গাদের দায়ী করেছে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন