রাঙামাটিতে ১৮ দলের মিছিল ঘিরে উত্তেজনা: পুলিশের গুলি ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৩৪
আলমগীর মানিক,রাঙামাটি
সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদেশে ১৮ দল ঘোষিত মিছিল সমাবেশের অংশ হিসেবে শুক্রবার রাঙামাটিতে স্মরণকালে বৃহত্তম বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোট। এদিকে ১৮ দলের মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হট্টগোলের সময় পুলিশসহ অন্তত ৩৪ জন আহত হয় বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৮ দলীয় জোটের কর্মীরা যৌথভাবে বিকাল ৪টায় একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি রাঙামাটি শহরের পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়। এসময় জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ আলম খুব সংক্ষেপে সমাবেশ শেষ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন।
নিউ মার্কেট চত্তরে এই সমাবেশ শুরুর ঠিক পরপরই উত্তর দিক থেকে কে বা কারা অতর্কিতে সমাবেশের উপর উপর্যুপরি ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এক পর্যায়ে তারা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৮ দলের কর্মীরাও এসময় সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে পুলিশ এসে মাঝখানে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে। এ ঘটনায় পুলিশসহ ৩৪ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে দলীয় সূত্রগুলো।
উত্তেজনার সময় জেলা পরিষদ কার্যালয় ও প্রশাসক কার্যালয়ের আশেপাশে কিছু ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। জেলা পরিষদ সূত্র দাবি করেছে, পরিষদ কার্যালয়ে বেশ ভাঙচুর চালানো হয়, তাদের ভাষ্যমতে কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ এই হামলাকে গণতন্ত্রের উপর আওয়ামী কর্মীদের নগ্ন হামলা দাবি করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ১৮ দলের কর্মীরা প্রতিবাদ সভা করে বিনা উস্কানীতে শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শাস্তি দাবি করেন। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি সভাপতি এডভোকেট দীপেন দেওয়ান, জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম, এলডিপি সভাপতি আশাপূর্ণ চাকমা, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ আলম, জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট সাইফুল ইসলাম পনির, পৌর বিএনপি সভাপতি ও পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ভূট্টো, জামায়াত নেতা হারুনুর রশিদসহ ছাত্রদল যুবদল ও শিবির নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে জেলা বিএনপি সহসভাপতি হাজি জহির আহাম্মদ সওদাগর, বিএনপি নেতা লেঃ কর্নেল (অব) মণিষ দেওয়ান, জেলা যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল, ছাত্রদল সভাপতি আবু সাদাত মোঃ সায়েম, সদর থানা বিএনপি সভাপতি এডঃ মামুনুর রশিদসহ ১৮ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ শেষে মিছিলটি পুণরায় বিএনপি কার্যালয়ে ফিরে এলে মিছিল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এদিকে জেলার কাউখালি উপজেলায় বিএনপির মিছিলে আওয়ামীলীগের হামলায় আহত হয় আরো ১১ জন।
এদিকে সমাবেশ চলাকালে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোঁড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোঃ কবির হোসেন। তবে জেলা প্রশাসনসূত্র থেকে জানানো হয়েছে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষ থেকে গুলি ছোঁড়ার ব্যাপারে কোনো নির্দেশ প্রদান করা হয়নি।