রাঙ্গামাটিতে জেলা উন্নয়ন কমিটির সভা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটনখ্যাত এ জেলার সুন্দর রূপ দিন দিন হারিয়ে যেতে চলেছে। শহরের প্রবেশ মুখ থেকে শুরু করে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন কার্যালয়, ফিসারি বাঁধ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যত্রতত্রভাবে গাড়ী রেখে এক শ্রেণীর লোক এ জেলার সৌন্দর্য্য নষ্ট করছে।

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফিসারি বাঁধে ভারী যানবাহন রাখার ফলে প্রতিরক্ষা গাছগুলোও ভেঙ্গে পড়ছে। যা মোটেই কাম্য নয়। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান। উন্নয়ন ও প্রযুক্তির এই বিশ্বায়নে আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। জেলার উন্নয়নে অংশীদারীত্বের দাবিদার সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তরের প্রত্যেক কর্মকর্তাদেরকে নিজ নিজ কাজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য নুরুল আলম, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) শারমিন আলম, জেলা পরিষদ সদস্য ও জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রতিনিধি মনোয়ারা আক্তার জাহান, কাউখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম চৌধুরী, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ, রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রনজিত কুমার পালিত, রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মঈন উদ্দীন, রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল’সহ জেলা ও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ।

সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকারের সকল নিয়মনীতি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো উচিত। নতুবা পরীক্ষার ফলাফল ভালো আসবে না। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস করাতে হবে। তবেই ফলাফল ভালো আসবে। সরকার অবকাঠামো নির্মাণে আন্তরিকতার সাথে যথাযথ সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সরকারের এই সহযোগিতাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য নুরুল আলম বলেন, পাহাড়ে সামাজিক বনায়ন করতে হলে প্রত্যেক উপজেলায় নার্সারী করা প্রয়োজন। যেখান থেকে চাষীরা স্বল্পমূল্যে গাছের চারা সংগ্রহ করতে পারবে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে তিনি জেলা পরিষদকে পরামর্শ দেন।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) শারমিন আলম বলেন, পর্যটনখ্যাত এ জেলার অনেক সুনাম রয়েছে। কিন্তু রাউজান হতে রাঙ্গামাটি আসার পাহাড়ী আঁকা বাঁকা এ রাস্তার অনেক পয়েন্টে সতকর্তামূলক নির্দেশনা বা সাইনবোর্ড নেই। যে কারণে সড়ক দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্খা থেকে যায়। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন।

রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রনজিত কুমার পালিত বলেন, পর্যটনখ্যাত রাঙ্গামাটি জেলাকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে পুলিশ প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড, বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও মাদক বিক্রী সেবনের কোন তথ্য থাকলে তা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।

রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল বলেন, গেল ২মাস আগে শহরের ফরেস্ট অফিস ও কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তাটির দুপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তা পুনরায় গড়ে উঠছে। সে বিষয়ে প্রশাসনকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি ।

বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার বলেন, কাপ্তাই-চন্দ্রঘোনা হতে রাঙ্গামাটি পর্যন্ত বর্তমানে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের যে সংযোগটি রয়েছে তা ১৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে, যা রাঙ্গামাটিবাসীর জন্য পর্যাপ্ত নয়। নতুন সংযোগ কাজ আগামী ২মাসের মধ্যে সম্পন্ন হলে ২৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। তখন বিদ্যুৎ সমস্যার নিরসন হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন