রামগড়ে আ’লীগ বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,রামগড়:

খাগড়াছড়ির রামগড়ে বুধবার(২৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে পুলিশসহ দুপক্ষে অন্তত ২৫জন আহত হয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে আয়োজিত নির্বাচনী সভা পণ্ড হয়ে যায়। এসময় পুলিশ পরিস্থতি সামাল দিতে দুই রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এদিকে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শহরে  অতিরিক্ত  পুলিশ মোতায়েন ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার খাগড়াছড়ি আসনের বিএনপির দলীয় প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম ভুইয়ার পক্ষে তাঁর চাচা সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভুইয়ার নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা শহরের প্রধান সড়কে  নির্বাচনী মিছিল বের করে। দুপুরে মিছিলটি উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস সংলগ্ন বাস স্টেশনে শেষ করে সেখানে পথসভায় সমবেত হয়। এসময় পুলিশের বেষ্টনীতে  থাকা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা দলীয় অফিস প্রাঙ্গনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে শ্লোগান দেয়। অদূরে সমবেত বিএনপির নেতাকর্মীরাও শ্লোগান শুরু করে। এনিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দুপক্ষ একে অন্যকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ দুপক্ষকে সামাল দিতে দুই রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। পরে বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন পুলিশসহ আওয়ামী লীগ বিএনপির কমপক্ষে ২৫জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে বাস চালক আব্দুল কাদের(৩৫) ও মো. সেলিম(২৮)কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আহত কাদেরকে চ্ট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের কারণে বিএনপির নির্বাচনী পথসভা পণ্ড হয়ে যায়।

এদিকে রামগড় পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা অভিযোগ করেন, ওয়াদুদ ভুইয়ার নেতৃত্বে আসা  বহিরাগত বিএনপির কর্মীরা উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগের অফিস ও নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল, বোতল ইত্যাদি নিক্ষেপ করে। এসময় ঐ কর্মীরা পুলিশের উপরও হামলা চালায়। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা শের আলী ভুইয়া, পৌর কাউন্সিলর বাদশা মিয়া, ওয়ার্ড যুবলীগের সম্পাদক মো. সেলিম, মাদ্রাসা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত, আসিফ, সজীব, নাসিরসহ তাদের কমপক্ষে ১৫জন আহত হয়। এদের মধ্যে ওয়ার্ড যুবলীগের সম্পাদক সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন,  বিএনপি পরিকল্পিতভাবেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত গাড়িতে করে লাঠিসোটা, কোমল পানীয় খালি বোতল ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আসে।

অন্যদিকে, রামগড় উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইলিয়াছ অভিযোগ করেন, বিনা উস্কানিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি বাস চালক আব্দুল কাদের, বসর, মনির, জিয়া, ইমন, হারুণসহ ১০জন আহত হয়। গুরুতর আহত শ্রমিক দল নেতাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এ সময় ধানের বিএনপির নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত একটি জীপ গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।

দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ নিন্দা জানিয়ে বিএনপির চিহ্নিত নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন