রোজ অ্যাসিডিটি বা বদহজমের সমস্যা? ওষুধ ছাড়াই সুস্থ থাকুন এই সব উপায়ে


লাইফস্টাইল ডেস্ক:

খাওয়াদাওয়াই কেবল নয়, ঘুমের পরিমাণ, শ্রম সব কিছুর উপরেই হজমপ্রক্রিয়া অনেকটা নির্ভর করে।
কর্মব্যস্ততার জেরে বা সারা দিন পরিশ্রমের পর কিছুটা আলস্য থেকেই শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নিখুঁত যত্ন নেওয়ার সময় অনেকেরই হয়ে ওঠে না। কাজের ফাঁকে খাওয়ার অনিয়ম, রাস্তাঘাটের ফাস্টফুড বা অফিসপাড়ার সস্তা রাস্তার খাবারেই আস্থা রাখতে বাধ্য হতে হয়। এর ফলে গ্যাসট্রাইটিস বা অম্বল হয়ে ওঠে রোজের সঙ্গী।

বহু মানুষকেই নিয়মিত হজমের ওষুধ খেতে হয়। কেউ বা ঘরোয়া উপায়ে তা কমাতে উদ্যোগী হন। বুক জ্বালা, চোঁয়া ঢেকুর এ সবের সমস্যা তাতেও পুরোপুরি কাটে না। সারা দিনের খাওয়াদাওয়াই কেবল নয়, ঘুমের পরিমাণ, শ্রম সব কিছুর উপরেই হজমপ্রক্রিয়া অনেকটা নির্ভর করে।

দিনের পর দিন হজমের ওষুধ খেয়ে চলা কিন্তু কোনও কাজের কথা নয়। বরং নিজের কিছু অভ্যাস রপ্ত করতে পারলেই এই বদহজম বা গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। জানেন সে সব কী কী?

দিনের ডায়েটে রাখুন দরকারি ফাইবার:

ডায়েটে যোগ করুন পর্যাপ্ত ফাইবার। গ্যাস-অম্বলকে সরাতে আমাদের শরীরের প্রয়োজন হয় প্রায় ২৮ শতাংশ ফাইবার। নানা রকম ফল, কার্বোহাইড্রেট ও শাক-সব্জি থেকে তা পাওয়া যায়। তাই প্রতি দিনের ডায়েটে রাখুন দরকারি ফাইবার। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য যেমন কমবে, তেমনই শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান মিলবে। গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও এর হাত ধরে নিয়ন্ত্রণ হবে অনেকটাই।

তাড়াহুড়ো করে খান? তা হলে এই অভ্যাসে রাশ টানুন। ভাল করে চিবিয়ে খাবার না খেলে তা থেকে শক্তির জোগান পাওয়া যেমন দুশ্কর হয়ে পড়ে, তেমনই হজম হতেও সমস্যা হয়। শরীরের প্রয়োজনীয় উত্তাপও না চিবোনো খাবার থেকে মেলে না। আর শারীরবৃত্তীয় কাজগুলোয় ফাঁক পড়ে যাওয়ায় বদহজম, অম্বল এ সব হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়।

আপনার শরীরে কতটুকু জলের প্রয়োজন তা জেনে সেই অনুপাতে জলের জোগান দিন শরীরকে। জলের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে গ্যাস-অম্বলকেও পরাস্ত করা যাবে না। বরং জলই পারে অন্ত্রের কাজকর্মকে ঠিক ভাবে পরিচালিত করতে। তাই জলের অভাব ও তেল-মশলার পর জল খেয়ে নেওয়া এই সব ভুলই ডেকে আনে বদহজমের ঝঞ্ঝাট।

টকদইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান শরীরে কোনও প্রকার গ্যাস-অম্বল হতে দেয় না।

খাবারের পাতে যোগ করুন টকদই। অনেকেরই ধারণা, এর আম্লিক ধরন হয়তো ডেকে আনে অ্যাসিডিটিকে। এ ভাবনা ঠিক নয়। বরং কোনও ভারী খাবারের পর টকদই খেলে তা হজমে সাহায্য করে। তাই দুধ সহ্য না হলে টকদই বা ছানা খান নিশ্চিন্তে। সময় বুঝে টকদই খেলে আখেরে লাভ আপনারই। এর প্রোবায়োটিক উপাদান শরীরে কোনও প্রকার গ্যাস-অম্বল হতে দেয় না।

শরীরের প্রতি যত্নশীল ও নিয়মানুবর্তী হোন। অকারণে তেল-মশলা বা রাস্তার খাবারে আস্থা না রেখে হয় খাবার নিয়ে যান বাড়ি থেকেই, নয়তো এমন কোনও খাবার খান, যেখানে তেল-মশলার পরিমাণ কম। সময়ে খাওয়াদাওয়া করুন। খালি পেট রাখলেও গ্যাস-অম্বলের উপদ্রব বাড়ে। ঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম ও ঠিক সময়ে খাওয়া এই কয়েকটি অস্ত্রেই ঘায়েল করা যায় গ্যাস-অম্বলকে।

 

সূত্র: আনন্দবাজার

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *