রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওদের নিয়োগ বানিজ্য

উখিয়া প্রতিনিধি:

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োগ বানিজ্যের পাশা পাশি ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

নিয়োগের নামে দেশী-বিদেশী এনজিও সংস্থার কতিপয় কর্মকর্তা লোভে বশিভুত হয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

শুধু তাই নয় উত্তর বঙ্গের ভাই-বোন থেকে শুরু করে শালক শালিকা ও আত্মীয় স্বজন এনে চাকরিতে নিয়োগ দিচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা যুবক যুবতীদেরকে চাকরি দেওয়ার ঘটনা নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

ফলে উখিয়া টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার শিক্ষিত যুবক যুবতিরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবার নামে প্রায় ১৭৪টি দেশী-বিদেশী এনজিও সংস্থা উখিয়া ও টেকনাফের ১২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করে। ত্রান সামগ্রী বিতরন থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, চিকিৎসা, শিশু বিকাশ, নারী বান্ধব কার্যক্রমসহ ওয়াটার এবং স্যানিটেশন ও সেড নির্মাণ করে আসছে।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, এ সব মানবিক সেবার কার্যক্রম বাস্তবায়নে এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, কোষ্ট ট্রাস্ট, ইসপা, আইওএম, ওয়াল্ড ফুড, এনজিও ফোরাম, এসিএফ, কোডেক, এমএসএফ, অক্সফাম, প্লান ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড ভিশন, ইসলামী রিলিফ, পিএইচডি, ইউনিসেফ, রেড ক্রস, সোলিডর, পালস বাংলাদেশ, মুক্তি, সেইভ দ্যা চিল্ড্রেনসহ বেশ কয়েকটি এনজিও সংস্থা আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা হতে বিশাল অংকের অর্থ সংগ্রহ করে|

উখিয়ার কুতুপালং, মধুর ছড়া, লম্বা শিয়া, বালুখালী, থাইংখালী, তাজুনিমার খোলা, ময়নার ঘোনা, ফালংখালী, টেকনাফের লেদা ও শাপলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিপুল সংখ্যক কর্মী সহ কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদান এবং নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সচেনত নাগরিক সমাজের দাবী ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও সংস্থায় নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,  সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম, সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন আইএনজিও এবং এনজিওদের সাথে পৃথক বৈঠকে স্থানীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

ফালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, দেশী বিদেশী এনজিও সংস্থা সরকারের নির্দেশ অমান্য করে রংপুর, বরিশাল, কুষ্টিয়া, নাটোর, খুলনা ও রাজশাহী অঞ্চল থেকে লোক এনে ক্যাম্পে চাকরি দিচ্ছে। শুধু তাই নয় আন্তর্জাতিক আইন লংঙ্গন করে ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া শত শত রোহিঙ্গাদেরকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এতে করে উখিয়ার শিক্ষিতরা চাকরি থেকে বঞ্চিত।

অনেক স্থানীয় চাকরি প্রার্থীরা অভিযোগ করে জানান, এনজিও সংস্থার কতিপয় কর্মকর্তা নিয়োগ বানিজ্য করছে।

টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়। যারা টাকা দিতে পারে তারাই কেবল চাকরি পায়।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের  সহ সভাপতি  নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে এনজিও কর্তা ব্যক্তিরা তাদের ভাই বোন শ্যালক সহ আত্মীয় স্বজনদেরকে ডেকে এনে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন