রোহিঙ্গা চাপে পানের দামও চড়া

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

উখিয়া-টেকনাফের হাট-বাজারগুলোতে এবার পানের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় পানে আসক্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে। বর্তমানে এখানে মাঝারি সাইজের বিরা পান ১৫০-২০০ টাকা ও বড় সাইজের পান বিরা ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। পান ব্যবসায়ীদের অভিমত অতিরিক্ত ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা চাহিদার কারণে পানের দাম বিগত যেকোন সময়ের তুলনায় বেড়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উখিয়া উপজেলায় পান চাষের মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে ২ হাজার ৭৫০টি পরিবার। এসব চাষীরা বর্গা জমিতে, খাস জমি ও বন বিভাগের পরিত্যাক্ত জমি ছাড়াও নিজস্ব জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পান চাষ করে থাকে। উপজেলার জালিয়াপালং, রাজাপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের ২৭৫ হেক্টর জমিতে পান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও থাইংখালী ইউনিয়নে ৩৫ হেক্টর জমি রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাওয়ায় পান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহজাহান জানান, ২০১৭ সালের ২৫ শে আগস্টের পর থেকে ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের প্রিয় খাদ্য পান, বিড়ি, সিগারেট। রোহিঙ্গাদের অতিরিক্ত চাহিদা বাড়লেও পান উৎপাদন বাড়েনি। উপরোন্ত রেহিঙ্গারা পানের বরজের কাঠ জাতীয় বিভিন্ন উপকরণ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করায় পান চাষীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি পান উৎপাদন হ্রাস পেয়ে আশঙ্কাজনকভাবে। যে কারণে হাট বাজারে পানের দাম আগের যেকোন তুলনায় বেড়েছে ৫ গুন।

পান ব্যবসায়ী ও আড়তদার সালাম জানান, উখিয়ায় উৎপাদিত পান গুণগত মানসম্পন্ন বিধায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানীর মাধ্যমে সরকার ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার শরীফুল ইসলাম জানান, পানের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য স্থানীয় পান চাষীদের নিয়ে সেমিনারের মাধ্যমে অধিক পান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ব্যাকটেরিয়া মুক্ত পান উৎপাদনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এ উপজেলার ৩ জন পানচাষীকে এককালীন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন