রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশকে ‘সর্বাত্মক সহযোগিতা’ দেবে ইইউ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ধৈর্য্য, উদারতা, সহমর্মিতা ও মানবিকতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ)। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সংকট উত্তোরণে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ওই সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে এক বৈঠকে ইউ’র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি এসব কথা জানিয়েছেন। বৈঠকে প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো করার ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। শুক্রবার সকালে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মোঘেরিনি জানান, সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে ইইউ। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতি তাদের ‘সর্বাত্মক সহযোগিতা’র আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পালিয়ে আসা বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হলেও তা কার্যকরের বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। এদিকে এখনও বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ৬৫০০ মানুষ দু’দেশের মধ্যবর্তী নো-ম্যানস ল্যান্ড তমব্রুতে অবস্থান করছে। দেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নে এ ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে মিয়ানমারকে দোষারোপ করছে জাতিসংঘ। এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগগুলো সম্পর্কে মোঘেরিনিকে বিস্তারিত জানান। নিরাপদ ও ফলপ্রসু প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টির ওপর জোর দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। বিশেষত সেনাবাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।

বৈঠকে ইউরোপীয় সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে অনুমোদন ছাড়া অবস্থান করা বাংলাদেশিদের চিহ্নিত ও ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও ইউ-এর মধ্যে থাকা স্টান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর নিয়ে আলোচনা করেন।বৈঠকের আলোচনায় এই বিষয়ে অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেন তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ ভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে এক নৈশভোজে যোগ দেন সফররত মাহমুদ আলী। ওই নৈশভোজে ইইউ সাংসদরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়ে সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেন। ওই নৈশ ভোজে মাহমুদ আলী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে নেওয়া পরিকল্পনা বিশেষ করে আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ বাস্তবায়ন করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে ইইউ সাংসদদের সমর্থন কামনা করেন।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন