লক্ষীছড়িতে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ

ডেস্ক নিউজ:
“সমাজ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রসহ সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়িতে ২০১৩ সালের এসএসপি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)। শুক্রবার এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বানচাল করার জন্য প্রশাসন ও সেনাবাহিনী নানাভাবে বাধাদানের চেষ্টা চালায় বলে দাবী করছে সংগঠনটি। দপ্তর সম্পাদক উমেশ চাকমা প্রেরিত এক বার্তার মাধ্যমে তারা এ দাবী করেন।

বার্তায় বলা হয়, সকাল থেকে অনুষ্ঠানে লোকজন জমায়েতের গাড়িগুলো থানায় আটকিয়ে রাখা হয়। প্রশাসনের বাধার কারণে অনুষ্ঠানটি লক্ষীছড়ি উপজেলা সদরের শিলাছড়িস্থ লক্ষীছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে করার কথা থাকলেও যতীন্দ্র কার্বারী পাড়া মাঠে করতে হয়েছে। সেখানেও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। ১৫ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ দেয় এবং নানাভাবে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালায়।
প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সকল বাধা উপেক্ষা করে দুপুর সাড়ে ১২টায় লক্ষীছড়ি ইউনিয়নের যতীন্দ্র কার্বারী পাড়া মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি অংগ্য মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান। আপ্রুসি মারমা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে ৫ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকার নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠান শুরুতে ২০১৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বানচাল করে দেয়া জন্য প্রশাসন ও সেনাবাহিনী নানা তালবাহানা করেছে। তারা নানাভাবে আমাদের অনুষ্ঠানে বাধা দিয়েছে। প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে আমরা নির্ধারিত স্থানে অনুষ্ঠানটি করতে পারিনি। কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মতো একটি সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রশাসনের এ ধরনের আচরণ চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।
বক্তারা বলেন, এদেশের শাসকগোষ্ঠি, এখানকার প্রশাসন ছাত্র-যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য নানা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। মদ, জুয়া, হিরোইনে আসক্ত করে ছাত্র-যুব সমাজকে আন্দোলন বিমূখ করার চেষ্টা চলছে। মুখোশ বাহিনীর আদলে এখানে বোরকা বাহিনী সৃষ্টি করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্র-যুব সমাজ গর্জে উঠতে হবে।

বক্তারা ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্ররাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যত কর্ণধার। ছাত্রদেরকেই আগামী দিনের সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে ছাত্র-যুবকদেরকেই বলিষ্ট ভূমিকা রাখতে হবে।
বক্তারা এলাকার শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে আরো বেশি সচেতন হওয়ার জন্য ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকার জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানন।
অনুষ্ঠান শেষে কৃতি শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে শিক্ষণীয় বই প্রদান করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন