লামায় ইউএনও’র উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাই
লামা প্রতিনিধি:
লামা উপজেলার পূর্ব চাম্বি মুসলিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি।
রোববার (১ জুলাই) সকালে এলজিইডির প্রকৌশলী ও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিদর্শনে যান তিনি। কাজের বাস্তব অগ্রগতির চেয়ে অতিরিক্ত বিল প্রদান করায় সামাজিক যেগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন নিয়ে অভিযোগ ওঠে।
রোববার সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিন উপস্থিত থেকে বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালায় নিশ্চিত করেছেন।
৩য় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পূর্ব চাম্বি মুসলিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজে ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মেসার্স ইউটি মং নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে এলজিইডি চুক্তি করে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সরেজমিন অগ্রগতিকে ধামাচাপা দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কাগজে কলমে অতিরিক্ত অগ্রগতি দেখান। অতিরিক্ত অগ্রগতি দেখিয়ে সদর অফিস থেকে টাকা আনেন। সরেজমিনে কাজের কলাম ঢালায় ও ছাদের সেন্টারিং সহ রড বাইন্ডিং করা হয়। গত ১ সপ্তাহের মধ্যে ৩টি বিল করে বিদ্যালয়ের নিমার্ণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে ২৪ লক্ষ টাকা বিল সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে হইচই পড়ে যায়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, কাজের গুণগত মান ঠিক রাখার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। কাজ না করে অতিরিক্ত বিল উত্তোলন করার বিষয়ে আমরা ক্ষোভ জানাচ্ছি।
স্থানীয় জনসাধারণ অভিযোগ করে বলেছেন, নিমার্ণ কাজ সমাপ্ত না করে অতিরিক্ত বিল উত্তোলন করায় কাজের গুণগতমান ঠিক থাকবে না। তাছাড়া কাজ চলাকালীন সময়ে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অনুপস্থিত থাকেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজের ইচ্ছামত কাজ করেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউটি মং এর পক্ষে চন্দন দাশ জানান, অতিরিক্ত বিল করা হলেও পে-অর্ডার করে রাখা হয়েছে।
কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিউর রহমান জানান, কাজের অগ্রগতি হয়নি ঠিক, তবে উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে আমি বিল করেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেছেন, টাকা ফেরত যাবে তাই জুন মাসে টাকা উত্তোলন করে রাখা হয়েছে।
এলজিইডির বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী জানিয়েছেন, পিইডিপির প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব উপজেলা প্রকৌশলীর। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
পিইডিপির চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা জানিয়েছেন, কাজের গুণগতমান ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন কোন ধরণের অনিয়ম সহ্য করবে না।
রোববার বিদ্যালয়ের ঢালাই কাজ চলাকালীন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মিজানুর রহমান, এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন, স্থানীয় ইউপি মেম্বার, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য, ঠিকাদার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি।