শামুক পাহাড়ে উপজাতি সম্প্রদায়ের উপাদেয় খাবার: বাণিজ্যিকভাবে শামুক চাষের সম্ভাবনা
দীঘিনালা প্রতিনিধি:
পাহাড়ে উপজাতি সম্প্রদায়ের রুচিশীল আরেকটি খাবার হচ্ছে শামুক। আর ব্যাপক চাহিদা থাকায় রয়েছে, বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা। বর্তমানে শামুক হাঁস, মাগুর মাছ, এবং পাঙ্গাস মাছের খাবার ছাড়াও উপজাতিদের খাবার হিসেবে বাজারে প্রতিকেজি শামুক বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।
শামুক সর্ম্পকে জানা যায়, Mollusca পর্বের Gastropoda শ্রেণীর নরমদেহী প্রাণীর নাম শামুক। এদের এক জোড়া অথবা দুই জোড়া শুঙ্গ থাকে, মাথা স্পষ্ট, পা চওড়া। এদের শরীর একটি পেচানো খোলকে আবৃত থাকে। তবে কখনো কখনো খোলক অনুপস্থিত থাকে।
স্থলে বাস করে এমন শামুক Macrochlamys indica I M.sequax এর অন্তর্ভুক্ত এদের মাথায় দুই জোড়া কর্ষিকা থাকে, যা প্রয়োজনে গুটিয়ে রাখতে পারে। পেছনের জোড়া কর্ষিকার আগায় থাকে চোখ। এরা শুষ্ক মৌসুমে গ্রীষ্ম নিদ্রায় থাকে। তবে এরা শাকসবজি থেকে শুরু করে শস্য দারুবৃক্ষ, বাহারি উদ্ভিদের মারাত্বক ক্ষতি করে।
অন্যদিকে Bellamya bengalensis ও Pila globosa পর্বের শামুক খাবার হিসেবে খায় বাংলাদেশে বসবাসরত উপজাতিরা। এ শামুক স্বাদু পানিতে বসবাস করে। বিশেষ করে পুকুর, জলাশয়, ধানি জমি, এবং নদীতে বাস করে। তবে এরা কারো ক্ষতিকরে না।
তবে খাবার হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও মাগুর মাছের খাবার, হাঁসের খাবার মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইতিমধ্যে দেশের সমতল জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়ে গেছে।
দীঘিনালা উপজেলার মিলনপুর গ্রামে শামুক ধরার সময় কথা হয় মায়া রানি চাকমা, শোভা চাকমার সাথে। এসময় তারা জানান, নিজের খাবারের জন্য পুকুর থেকে সব সময় শামুক ধরে থাকি। তবে আবার বাড়তি পেলে ৫০/৬০ টাকা হিসেবে বাজারে বিক্রি করতে পারি। এভাবে সারাদিন ধরলে ৭/৮ কেজি হারে ধরা যায়
দীঘিনালা উপজেলা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নলেজ চাকমা জ্ঞান জানান, আমাদের পাহাড়িরা সকলেই রান্না করে শামুক খেয়ে থাকি। তবে এটা খুব আমিষযুক্ত উপাদেয় খাবার। এখানে পুকুর জলাশয়ে থাকা শামুক প্রায় শেষের পথে। তাই বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করার সুযোগ রয়েছে
উপজেলার শ্রেষ্ঠ মৎসচাষী মো. শাহজাহান জানান, শামুক পাঙ্গাস মাছের উৎকৃষ্ট খাবার। পাঙ্গাস মাছ চাষ করা পুকুরে শামুক ভেঙ্গে দিলে অন্যকোন খাবারের প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়া শামুকের তেমন চাহিদা না থাকলেও বর্তমানে দিন দিন শামুকের চাহিদা বেড়ে চলেছে। তাই বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।