সন্তু লারমার আল্টিমেটামের আর মাত্র ৩ দিন বাকি: কী ঘটতে চলেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে?

অসহযোগ আন্দোলন

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:

আর মাত্র ৩ দিন। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য জনসংহতি সমিতির চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার অসহযোগ আন্দোলনের আল্টিমেটামের আর মাত্র ৩ দিন বাকি। এই ৩ দিন পর কী হতে চলেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে- এ নিয়ে তিন পার্বত্য জেলার পাশাপাশি সারাদেশেই চলছে প্রবল গুঞ্জন। কী ঘটবে পার্বত্য চট্টগ্রামে? কী করতে চলেছেন সন্তু লারমা- এ নিয়ে নানা প্রশ্ন পাহাড়ের সর্বত্র।

গত ২৯ নভেম্বর ২০১৪ তারিখ শান্তিচুক্তির ১৭ বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে ঢাকাস্থ হাতিরপুল এলাকায় বীর উত্তম সিআর দত্ত সড়কে অবস্থিত হোটেল সুন্দরবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) এর সভাপতি এবং পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) কর্তৃক লিখিত বক্তব্যে সরকার ও নিরাপত্তাবাহিনীর সমালোচনার পাশাপাশি আগামী ৩০ এপ্রিল ২০১৫ তারিখের মধ্যে পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সময় ভিত্তিক কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে আগামী ১ মে ২০১৫ তারিখ থেকে পিসিজেএসএস এর নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা অসহযো আন্দোলনের ধরণ হিসাবে অহিংস ও সহিংস যেকোনো পন্থায় হতে পারে। এদিকে গত ৬-৮ মার্চ অনুষ্ঠিত ২০১৫ তারিখ পিসিজেএসএস’র ১০ম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা উপস্থিত ডেলিগেটদের উদ্যেশ্যে বলেন, সরকার আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থ হলে আগামী ১ মে ২০১৫ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের জন্য জুম্ম জনগণ যে কোন কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

 প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই আন্দোলন? সন্তু লারমা স্থানীয় সরকারের একজন প্রতিনিধি। শপথ না নিলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ও সুবিধা ভোগ করে আসছেন। সরকারী মর্যাদায় জাতীয় পতাকাধারী একজন ব্যক্তি কি করে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন? পাহাড় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অভিমত শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নযোগ্য বেশিরভাগ ধারায় সরকার বাস্তবায়ন করেছে।  এর বাইরে শান্তিচুক্তিতে এমন কিছু ধারা রয়েছে যা বাস্তবায়ন করতে গেলে দেশের বিদ্যমান আইন, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। ফলে সেই ধারাগুলো বাস্তবায়নে সরকার দ্রুত এগুতে পারছে না। এ বিষয়টিই মেনে নিতে পারছে না সন্তু লারমা ও তার দল জনসংহতি সমিতি। তারা চাইছে অসহযোগ আন্দোলনের চাপে ফেলে শান্তিচুক্তির অবাস্তবায়নযোগ্য কিছু ধারাসহ তাদের দীর্ঘদিনের অনিস্পন্ন কিছু দাবী ও আর্থিক সুবিধা সরকারের কাছ থেকে আদায় করে নিতে।

প্রশ্ন হচ্ছে, অহযোগ আন্দোলনের জন্য সন্তু লারমা কী ধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করবেন এবং তাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনজীবন, রাজনীতি ও প্রশাসনে কী প্রভাব পড়বে? গত কয়েকদিন যাবত তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগণ, নিরাপত্তা সংস্থাসমূহ এবং গোয়েন্দাবাহিনীসহ, জেএসএস, ইউপিডিএফ নেতাসহ সকল পর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়ে এ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছে পার্বত্যনিউজ।এ সকল অনুসন্ধানে সন্তু লারমার কর্মসূচী নিয়ে বিভিন্ন তথ্য পেয়েছে পার্বত্যনিউজ। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে রয়েছে:

পিসিজেএসএস কর্তৃক অসহযোগ আন্দোলন প্রাথমিক পর্যায়ের সম্ভাব্য কর্মপন্থাগুলোর মধ্যে হরতাল, সড়ক ও নৌ-পথ অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল, সভা-সমাবেশ, অবস্থান ধর্মঘট, সরকারি কার্যক্রমে/উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাঁধা প্রদান, নিত্য প্রয়োজজনীয় দ্রব্যসামগ্রী পরিবহনে বাঁধা সৃষ্টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট, স্বাভাবিক চলাচলে জনগণকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, বিশেষ করে উপজাতি সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে কর্তব্য পালনে বিরত রাখার অপচেষ্টা, এমনকি তাদেরকে পদত্যাগেও বাধ্য করা হতে পারে। এই কর্মসূচীর আওতায় প্রাথমিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচী থাকতে পারে। অনির্দিষ্টকাল বলা হলেও এই কর্মসূচীর মেয়াদ ৭ থেকে ১৫ দিন স্থায়ী হতে পারে। কর্মসূচী অহিংস বলা হলেও জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন অবরোধ বা বাঁধা অপসারণ করতে গেলে পিসিজেএসের নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষ সৃষ্টি হবে। এ সংঘাতে তীব্রতা ছড়াতে বাঙালীদের জালমালের উপর হামলা করে ত্রিমুখী সংঘর্ষ সৃষ্টি করে একটি মহল পরিস্থিতি ভিন্নখাতে নেয়ার পাঁয়তারা করতে পারে। এ পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসাবে প্রচার করতে উপজাতি সমর্থিত গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী, দাতাদেশ ও সংস্থাগুলোর সাথে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তাদের মাধ্যমে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না মর্মে দেশে/ বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি/গোষ্ঠীর মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা সরকারকে বিব্রত করা হবে। এভাবে দেশী বিদেশী কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী ও গণমাধ্যমের সাহায্যে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি রেখে পিসিজেএসএস তাদের দাবীগুলো সরকারের নিকট থেকে আদায়ের প্রচেষ্টা চালানোই এবারের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য বলে জানা গেছে।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে একমাত্র রাঙামাটিতে জনসংহতি সমিতি বা সন্তু লারমার আধিপত্য রয়েছে। খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও জেএসএস সংস্কার ও বান্দরবানে বাঙালীদের প্রাধান্য রয়েছে। তাই সন্তু লারমার সকল আন্দোলনের ফোকাল পয়েন্ট থাকবে রাঙামাটি জেলাকে ঘিরে।অন্যজেলাগুলোতে এর প্রভাব ততটা ব্যাপক নাও হতে পারে।

হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচীতে কাজ না হলে অহিংসপন্থার যে ঘোষণা দিয়েছেন সন্তু লারমা। তার অংশ হিসাবে পার্বত্যাঞ্চলে অপহরণ, গুম, খুন/হত্যা, সশস্ত্র সংঘাত ইত্যাদির মাত্রা বৃদ্ধি করা। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকরতঃ শান্তিচুক্তির পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারে বলে তথ্যে জানা যায়। এর অংশ হিসাবে বাঙালী অধ্যুষিত এলাকাসমূহে ( রাঙামাটি সদর, লংগদু, কাউখালী, নানিয়ারচর, বরকলের ভূষণছড়া প্রভৃতি) অতর্কিত হামলা পরিচালনা করা হতে পারে। সরকারী কর্মকর্তাদের উপর অতর্কিত হামলা ও অপহরণের ঘটনা ঘটাতে পারে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর টহল দলের উপর কয়েকটি হামলার ঘটনা এই আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

পিসিজেএসএস কর্তৃক ৩০ এপ্রিল ২০১৫ এর মধ্যে তাদের দাবী-দাওয়া পূরণ (শান্তিচুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নসহ ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি আইন তাদের প্রস্তাবিত সুপারিশের আলোকে সংশোধন, উপজাতিদের আদিবাসী হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান প্রভৃতি) না হলে পার্বত্যাঞ্চলে সশস্ত্র আন্দোলনে যাওয়ার যে আল্টিমেটাম বা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে তা পরবর্তীতে সাংঘর্ষিক ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে তাদের কল্পিত স্বাধীন রাষ্ট্র জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হতে পারে বলে তথ্যে জানা যায়। এছাড়াও, শান্তিচুক্তির পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার পাশাপাশি আন্দোলন এবং আধিপত্য বিস্তারকেন্দ্রীক বন্দুকযুদ্ধ, অপহরণ, গুম, খুন/হত্যা, চাঁদাবাজিসহ অচলাবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে বলে প্রতীয়মান।

ইতোপূর্বে পার্বত্য চট্রগ্রাম হতে বাঙালী বিতাড়নের লক্ষ্যে উপজাতি কর্তিক নানিয়ারচর এলাকায় বাঙালীদের আনারস বাগান, গামার ও সেগুন বাগানে গান পাউডার ব্যবহার করে বাগানের ক্ষতি সাধন করেছিল। অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে পিসিজেএসএস এর সন্ত্রাসীশাখা কর্তৃক শাখাধীন বাঙালী অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় (নানিয়ারচর, লংগদু, বরকলের ভূষণছড়া, বাঘাইছড়ি) পূর্বের ন্যায় নাশকতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে।

অহিংস আন্দোলনের অংশ হিসাবে বিভিন্ন প্রকার নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড যেমন, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ পরিচালনা এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরুদ্ধে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি যা চলমান রয়েছে সেসকল অপতৎপরতার মাত্রা আরো বৃদ্ধি করতে পারে। এসকল প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িতদের উপর হামলা করা হতে পারে। রাঙামাটি হতে নৌপথে বিভিন্ন রুটে (রাঙামাটি হতে বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, লংগদু, হরিণা, বরকল, কাপ্তাই, এবং বিলাইছড়ি) যাতায়াতকৃত যাত্রীবাহী লঞ্চ/ট্রলারে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানো হতে পারে। রাঙামাটি হতে সড়ক পথে বিভিন্ন রুটে ( রাঙামাটি হতে খাগড়াছড়ি, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, বান্দরবান, ও চট্রগ্রাম) যাত্রীবাহী বাসে অতর্কিত হামলা/অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতে পারে। এছাড়া হাট-বাজার এবং যে সকল স্থানে লোকসমাবেশ হয়ে থাকে এমন স্থানসমূহে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হতে পারে।তিন পার্বত্য জেলার ধর্মীয় স্থাপনায় এমনভাবে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হতে পারে যার দোষ বাঙালীদের উপর চাপানো যায়।

এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আল্টিমেটামের শুরু থেকেই পাহাড়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে নানা প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, বিপ্লবী যুব সমিতির নামে নতুন করে সদস্য সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণ প্রদান, অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ, নিষ্ক্রিয় সদস্যদের সক্রিয়করণ, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে অবস্থানরত উপজাতীয় যুবকযুবতীদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে চট্টগ্রামে সরিয়ে আনা- বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের, সরকারী সার্ভিসে যুক্ত উপজাতীয় কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধকরণ ইত্যাদি। এইসব সশস্ত্র উপজাতীয় রিক্রুটদের বড় একটি অংশ ইতোমধ্যে ভারতের মিজোরামে প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যাদের একটি অংশ মিজোরাম পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় এ তথ্য জানা গেছে। অনুপ্রবেশকারী সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন দূর্গম এলাকা সাজেক, বাঘাইছড়ি, দিঘীনালা, নাড়াইছড়ি, জুড়াছড়ি, বরকলের গহীন পাহাড়ে অবস্থান করছে। দূর্গম পাহাড়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াতকারী বাঙালীদের কাছ থেকে জানা গেছে উপজাতী সন্ত্রাসীদের তৎপরতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে।

তবে পাহাড়ীদের একটি অংশের অভিমত, নানাবিধ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সন্তুলারমা পাহাড়ী সচেতন জনগোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সরকারের সাথে আতাঁতের অভিযোগ প্রতিপক্ষ সব সময় প্রকাশ্যে করে থাকে। এমনকি নিজ দলেও তার আধিপত্য খর্ব হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মাঝে নিজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও নিজ দলে নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার করতেই সন্তু লারমা এ ধরণের কর্মসূচী না দিয়ে কোনো উপায় ছিল না।

এদিকে রাজনৈতিকভাবে প্রবল বিরোধিতা থাকলেও সন্তু লারমার আল্টিমেটাম নিয়ে প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফ’র প্রবল আগ্রহ রয়েছে। ইউপিডিএফ যৌথভাবে এই আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য জেএসএস’র প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু সন্তু লারমা এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।ফলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ব্যর্থ হলেও ইউপিডিএফ’র সদস্যরা জেএসএস’র অহযোগ আন্দোলনে যোগ দিতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া সন্তু লারমা আন্দোলনের ছাত্রছায়ায় জেএসএস’র নাম করে ইউপিডিএফ নানা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে সন্তু লারমার এই আল্টিমেটাম মোকাবেলায় প্রশাসনের প্রস্তুতি কী তা নিয়ে তিন পার্বত্য জেলার প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের অভিমত জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের মতে, সন্তু লারমা একটি রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরকারের কাছে একটি দাবী জানিয়েছেন। সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে। সরকারের কাছ থেকে দাবী পুরণ না হলে তিনি অসহযোগ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে। সেক্ষেত্রে যেকোনো নৈরাজ্য, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী ও শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কর্মসূচী মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তাবাহিনীসমূহের সর্বপ্রকার প্রস্তুতি রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন