Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

সবচেয়ে সুন্দরী’কে বাছাই করে আলাদা ধর্ষণ করে মিয়ানমারের সেনারা

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১০ বছরের কম বয়সী রোহিঙ্গা মেয়ে শিশুরাও ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে কাজ করছে এমন একটি সংস্থা। মেডিসিন স্যান ফ্রন্টিয়ার নামের ওই সংস্থাটি জানায়, ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নেওয়া অর্ধেক রোহিঙ্গা নারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে। এমনকি দশ বছরের কম বয়সীদেরও পেয়েছেন তারা।

সংস্থাটি বলছে, কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে এ রকম কয়েক ডজন রোহিঙ্গা শিশুকে শারীরিক এবং মানসিক চিকিৎসা দিয়েছেন তারা। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীরা বরাবরই জানিয়ে আসছেন, নিপীড়নের সময় মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তারা। জাতিসংঘ ওই সেনা অভিযানকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে আসলেও এই প্রথমবার জানা গেল ধর্ষণের শিকার হওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের সংখ্যাটাও বড়।

সংস্থাটির একজন মুখপাত্র গার্ডিয়ান-কে জানিয়েছেন, ‘ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নেওয়া অর্ধেক নারীর বয়স ১৮-এর নিচে। এমনকি আমরা ৯ বছরের এক শিশুকে পেয়েছি। আর দশ বছর বয়সীও পেয়েছি বেশ কয়েকজন।’

সংস্থাটির ধারণা, ধর্ষণের শিকার কিছু সংখ্যক শিশুদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও আরও বহু সংখ্যক শিশুর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসা নিতে সামাজিক ও মানসিক বাধার মুখে পড়ছে তারা। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যেই এসব শিশুদের পাওয়া যাচ্ছে।

আরলিন পেফিল নামে ওই সংস্থার এক কর্মকর্তা বলছেন, লোকলজ্জা এবং ট্যাবুর কারণে নারী ও শিশুরা ধর্ষণের শিকার হওয়া সত্বেও অনেকেই চিকিৎসা নিতে আসেন না। তিনি জানান, গত সপ্তাহে সম্প্রতি পালিয়ে আসা নয় বছরের এক রোহিঙ্গা শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।

ওই সংস্থার আরেক কর্মী বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের এক জায়গায় জড়ো করে ‘সবচেয়ে সুন্দরী’কে বাছাই করে আলাদা করে ধর্ষণের জন্য নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সেনারা। যাদের মধ্যে অনেকের বয়সই বারো-তেরো বছর।

তিনি জানান, প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে চিকিৎসা নিতে আসা ১০ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা শিশুকে ধর্ষণ করেছে তিন সেনা সদস্য।

তবে ক্যাম্পে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ধর্ষণের শিকার হওয়া এসব রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কথা বলেনি গার্ডিয়ান। তবে রাখাইনের বুথিডং এলাকার এক ২৭ বছর বয়সী নারী জানান, ২৫ আগস্টের অভিযান শুরুর কয়েকদিন পর তার স্বামী ও বাবাকে ধরে নিয়ে যায় সেনা সদস্যরা। তাদের সঙ্গে ধরে নিয়ে যায় ১৪ বছর বয়সী বোনকেও।

তিনি বলেন, ‘সেনাসদস্যরা পুরুষদের একপাশে রেখে নারীদের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকজনকে আলাদা করে বাছাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম কিন্তু বোনকে রক্ষা করতে পারিনি।’

‘সেসময় তারা অনেক নারী আর শিশুকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করে। চলে গেলে বোনকে খুঁজতে গিয়ে দেখি মাটিতে অনেক দেহ পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে বোনকে পেলে বুঝতে পারিনি বেঁচে আছে কিনা। পরে দেখি নিঃশ্বাস নিচ্ছে’, বলেন ওই নারী।

‘প্রচুর রক্ত পড়ছিল। তাকে ছোট একটা নদীর পাড়ে নিয়ে পরিষ্কার করা হলো। তারপর কাঁধে করে ছোট একটা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাই। সেখানে কিছু ওষুধ পাই’, বলেন তিনি।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী তার বোনকে জানান, দুই সৈন্যের সঙ্গে তাদের গ্রামের এক বৌদ্ধ লোকও ধর্ষণ করেছে তাকে। ওই লোকটি তাদের গ্রামে হামলার সঙ্গেও জড়িত ছিল।

বাংলাদেশে পালিয়ে কুতুপালং শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ওই নারী জানান, ক্যাম্পে এর চিকিৎসায় বিশেষায়িত কোনো চিকিৎসক আছেন কিনা, জানেন না তিনি। ফলে এখনও কোনো চিকিৎসা নেওয়া হয়নি তার।

সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বেঁচে থাকতে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

গত সপ্তাহে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জাতিগত শুদ্ধি’ অভিযান চালাতে মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা ধর্ষণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

 

সূত্র: Asian Age Bangla

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন