“এক ম্যাচ খারাপ করলেই তিন ছেড়ে ফিরে যেতে হবে আগের অর্ডারে।”

সবাইকে বুঝিয়ে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে সাকিব

fec-image

 

আগে ব্যাটিং করতেন পাঁচে। এখন করছেন তিনে। এখানে সুযোগ পাওয়ার পরই ব্যাট হাতে সাকিব হয়ে উঠেছেন সুপারম্যান। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটিও করলেন তিনে সুযোগ পাওয়ার পর। যদি বলা হয় ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারের সেরা সময় তিনি কাটাচ্ছেন, হয়তো এতটুকুও ভুল হবে না।

কিন্তু তার এই তিন নম্বরে নামার পথটি মোটেও মসৃণ ছিল না। একে একে দলের সবাইকে মানিয়ে তবেই ফিরে পেয়েছেন প্রিয় জায়গা। চ্যালেঞ্জও কম ছিল না। এক ম্যাচ খারাপ করলেই তিন ছেড়ে ফিরে যেতে হবে আগের অর্ডারে। কিন্তু না, চ্যালেঞ্জ নিয়ে হারার পাত্র সাকিব নন। বরং প্রত্যাশার চাইতেও এই অর্ডারে তিনি ভালো করছেন। দিন যত যাচ্ছে ততই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে তার ব্যাট।

গত বছরের জানুয়ারিতে দেশের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে সিদ্ধান্ত হলো তিনে নামবেন সাকিব, যিনি ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়ই সামলেছেন লোয়ার মিডল অর্ডার। ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে এক যুগের ক্যারিয়ারে মাত্র দুবার তার সুযোগ হয়েছিল তিনে নামার। সাকিবকে তিনে খেলানো নিয়ে তখন মাশরাফি বিন মুর্তজার যুক্তি ছিল, ‘গত তিন-চার বছরে অনেককেই এখানে খেলানো হয়েছে। সাকিব ১০-১২ বছর ধরে ভালো খেলছে। সে যদি এক-দুই-তিন ম্যাচ ব্যর্থও হয়, আমি নিশ্চিত যে ও–ই একমাত্র খেলোয়াড়, যে আবার ফিরে আসতে পারে। তার নিজস্ব একটা ভাবমূর্তিও তৈরি হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটে।’

সাকিব ব্যর্থ হননি; বরং গত দেড় বছরে তিনি প্রমাণ করেছেন, এই পজিশনেই তিনি সেরা। ১৮ ওয়ানডেতে তিনে নেমে সাকিব করেছেন ৮৩১ রান। সেঞ্চুরি ১টি, ফিফটি ৮টি—১৮ ইনিংসের ৫০ শতাংশই তার ফিফটি পেরোনো ইনিংস। এই বিশ্বকাপটা তার দুর্দান্ত যাচ্ছে তিনে নেমেই। ৭৫, ৬৪, ১২১ সব মিলিয়ে ২৬০ রান করে সবার ওপরে আছেন সাকিব।

১০ ওভার বোলিংয়ের পাশাপাশি তিনে নেমে ব্যাটিং—কঠিন কাজটা কীভাবে সাফল্যের সঙ্গে করে চলেছেন, কাল সংবাদ সম্মেলনে সেটিই জানতে চাওয়া হলো সাকিবের কাছে।

‘এটা অন্য রকম। একটু ভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ নেওয়া দরকার। এই মুহূর্তে আমি উপভোগ করছি। তবে এটাও বলতে হবে মাত্রই শুরু, ব্যাটে-বলে যতটা সম্ভব অবদান রাখতে হবে। ভেবেছিলাম ব্যাটিংয়ে আরও বেশি অবদান রাখতে এটা আমার জন্য দারুণ এক সুযোগ। আমি উপভোগ করছি’— তিনে ব্যাট করা অনেকের কাছে যেখানে বিষম চাপ, সেটিই উপভোগ্য হয়ে উঠেছে সাকিবের কাছে।

এই পজিশনে তাকে নামতে কেউ বাধ্য করেনি বা কেউ অনুরোধ করেনি। সিদ্ধান্তটা ছিল সাকিবের নিজেরই। তিনে নামার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন যে মোটেও সহজ ছিল না, সেটি বলতে গিয়ে কাল কার্ডিফে সংবাদ সম্মেলনে হাসলেন সাকিব, ‘হ্যাঁ, (দলের) সবাইকে আমাদের বোঝাতে হয়েছিল। যদি রান না করতাম, তবে তারা ভাবত পাঁচেই আমার নামা উচিত। পাঁচে নামতেও আমাকে অনেক মানুষকে বোঝাতে হয়েছে। হ্যাঁ, এখন যেখানে নামছি কাজে দিচ্ছে।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: তিন নম্বরে, ব্যাটিংয়ে, সাকিব
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন