সু চি’র সঙ্গে বৈঠকের পরই পোপের ভাষণ, বিশ্বের নজর ইয়াঙ্গুনে

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচির সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন ভ্যাটিকান পোপ ফ্রান্সিস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে বৈঠক শেষ হওয়ার পর পরই পোপ ভাষণ দেবেন। আর সেই ভাষণে বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে পোপ কী বলেন সেদিকে বিশ্ব তাকিয়ে আছে বলেও উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক ও সমবেদনামূলক। ফ্রান্সিস এর আগে রোহিঙ্গাদের ‘ভাই ও বোন’ উল্লেখ করে সমর্থন করেছিলেন। তবে মিয়ানমারে নামার আগে ও পরে বিপন্ন ওই জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে কোনও রকম মন্তব্য না করার হুমকি পেয়েছেন তিনি। পরিচয়গত স্বীকৃতির প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের নাম উচ্চারণ করতে মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকার ও বৌদ্ধবাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে তাকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস বলছে, রোহিঙ্গা শব্দ উচ্চারণে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির সেনাবাহিনীর আপত্তি থাকায় কার্ডিনাল চার্লস মং বো পোপকে তা উচ্চারণ করতে মানা করেছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ৮০ বছর বয়সী পোপ তার মিয়ানমার সফরের দ্বিতীয় দিনে ইয়াঙ্গুন থেকে রাজধানী নেপিদোতে যান। সেখানে তিনি অং সান সুচির সঙ্গে বৈঠক করার পর একটি বক্তব্য দেবেন। বিবিসি জানিয়েছে এরইমধ্যে বৈঠকটি শুরু হয়েছে।

এদিকে সু চির সঙ্গের বৈঠককে পোপের মিয়ানমার সফরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি আখ্যা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান। একইভাবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস আজকের দিনটিকে পোপের সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে দেখছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে ওই বৈঠককে ‘বহুল প্রতীক্ষিত এক কর্মসূচি’ আখ্যা দিয়েছে। এশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এশিয়া ওয়ান বৈঠকটিকে পোপের সফরের ‘মূল বিষয়’ হিসেবে দেখছে।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতার পর রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে। সম্প্রতি এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলেছে যুক্তরাষ্ট্রও। তবে সব ধরনের হত্যাযজ্ঞ ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী।

সোমবার সফরের প্রথম দিনই মিয়ানমারের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি সিনিয়র জেনারেল মিং-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পোপ। পোপের নির্ধারিত বৈঠকটি শেষ দিন ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সফরের প্রথম দিনেই পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে মিং অনের এক আকস্মিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং দাবি করেন, মিয়ানমারে কোনও ধর্মীয় বৈষম্য নেই।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন