সেনা সদস্য হত্যার ঘটনায় পার্বত্য অধিকার ফোরামের নিন্দা

fec-image

গত রোববার (১৮ আগষ্ট) রাঙমাটির রাজস্থলীতে টহলরত সেনাবাহিনীর উপর পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলায় এক সেনা সদস্য নিহত ও দুইজন আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য অধিকার ফোরাম রাঙামাটি জেলা শাখা।

বুধবার (২১ আগষ্ট) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ নিন্দা জানায় সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও রাঙামাটি জেলার দায়িত্বশীল মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতিক দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর উপর হামলার ধৃষ্টতা দেখিয়ে পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা একের পর এক সাধারণ পাহাড়ি বাঙালীদের হত্যা করলেও প্রশাসন তাদের বিচার করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তারা চাঁদাবাজি, খুন, গুম করতে করতে এতোটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপরও হামলা করছে। অবিলম্বে এ সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আরো অস্থির ও ঘোলাটে করে তুলবে পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা, তখন পাহাড় হয়ে উঠবে অশান্ত। ভবিষ্যতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অবৈধ অস্ত্রধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সরকারকে আরো বেকায়দায় ফেলার চক্রান্তে মেতে উঠবে।

পার্বত্য অধিকার ফোরামের ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নাজিম আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার বলেন, পাহাড়ে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ভার সন্তু লারমা এড়াতে পারেন না। সরকার সন্তু লারমার সাথে চুক্তি করেছে উপজাতি সন্ত্রাসীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে অস্ত্র ত্যাগ করে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষে শুধু মাত্র শান্তি চুক্তির ১টি শর্ত ছিলো উপজাতি সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ত্যাগ করা। কিন্তু বর্তমানে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে ৮ জনকে হত্যা, বিলাইছড়িতে হত্যাকান্ড ও সর্বশেষ রাজস্থলীতে সেনা বাহিনীর উপর হামলায় গুলি ও বোমার ব্যবহারের ঘটনায় প্রমাণ করে পাহাড়ে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা এখনো অস্ত্র ত্যাগ করেনি। বরং অস্ত্র আগের চেয়ে কয়েক গুন বেশি মজুদ করছে।

এভাবে চুক্তির শর্ত বার বার লংঘন করছে সন্তু লারমা ও তার সশস্ত্র সংগঠন, কিন্তু সরকার তারপরেও কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সন্তু লারমার বিরুদ্ধে ও পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে হাবিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আদিবাসী বানানোর প্রচেষ্টা, পাহাড় থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের দাবি, টহলরত সেনাবাহিনীর উপর হামলা, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে চাকমা উপজাতিরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ দাবি করে সমাবেশ করা বাংলাদেশকে দ্বিখন্ডিত করার চেষ্টার ধারাবাহিক অংশ। তাই এই ধরণের রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দেশে এবং বিদেশে সরকারের আরো তৎপরতা বৃদ্ধি করে সকল মহলকে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সচেতন ও সোচ্চার করে তোলার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল তৎপরতা বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্রে ইন্ধন দিচ্ছে ও জড়িত তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অখন্ডতা রক্ষায় পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য অধিকার ফোরাম, বিবৃতি, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন