সোনাইছড়িতে বশির সিন্ডিকেটের পাথর যাচ্ছে সরকারি উন্নয়ন কাজে

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়িতে পাথর দস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিনে দুপুরে আইনের কোনটাই না মেনে পাথর তুলছে বশির সিন্ডিকেট। মাঝে মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান চালালেও পাথর দস্যুদের দৌরাত্ব্য কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। তবে বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন কিছু রাজনৈতিক নেতা পাথর দস্যুদের সহযোগিতা করায় প্রশাসনিকভাবে অভিযান বা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তারা আটকে যান।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, খাস কালেকশানের নামে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বশির আহমদ পাহাড় এবং ঝিরি ঝর্ণা খোদাই করে অবৈধ পন্থায় পাথর আহরণ করে রমরমা বানিজ্য করে যাচ্ছে। এসব পাথর প্রতি ঘনফুটে ১শ’ ৬০ থেকে ১শ’৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

পাহাড় খোদাই করে এভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে পাহাড়ী ঝিরি-খালের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে এবং ওই এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের তীব্র পানি সংকটে মুখোমুখি হওযার সম্ভাবনায় রয়েছে।

এদিকে পাহাড় খোদাই করে উত্তোলন করা পাথর সোনাইছড়ি-ঘুমধুম সড়কের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের ল্যাব পরীক্ষায় বান্দরবানের পাথরগুলোকে অবকাঠামো নির্মাণ কাজের অনুপযোগী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। যার কারণে সরকারি উন্নয়ন কাজে এসব পাথর ব্যবহার হুমকি হয়ে পড়েছে।

বান্দরবান জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহরাব হোসেন জানান, পাহাড় ও ঝিরি ঝর্ণার পাথর এবং পাহাড়ের ভেতরে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি বোল্ডার পাথর একমাত্র পানির উৎসের ক্ষেত্র। তাই এসব ক্ষেত্র রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।

এ বিষয়ে সোনাইছড়ির বৈদ্যছড়া এলাকার বাসিষন্দা পাথর ব্যবসায়ী বশির আহমদ জানান, বর্ষার কারণে গত বছর কিছু পাথর কোয়ারী থেকে বের করতে পারিনি। এবার পারমিট নিয়ে কিছু পাথর তুলছি। তবে তার এ বক্তব্যের বিষয়ে সচেতন স্থানীয়রা জানিয়েছেন- ১০ হাজার ফুট পাথর উত্তোলনের পারমিট নিয়ে লাখ ফুট উত্তোলন করা হলেও কৌশলী ব্যবসায়ীরা পরের বছর এ ধরণের আবেদন করে প্রশাসনকে ধোকা দেন।

এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, পাথর বনজ সম্পদ। অনুমোদন ছাড়া পাথর উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষেধ। ইতোপূর্বে সোনাইছড়ি পাথর উত্তোলনের বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। বন ধ্বংস করে পাথর উত্তোলনের অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন