স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সিদ্ধান্তবলী অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে- পিসিপি
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
অাজ ১৬ ফেব্রুয়ারী অপরাজেয় বাংলা পাদদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়-এ, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখা কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত, বিধি-নিষেধ আরোপ ও প্রজ্ঞাপন জারীর প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সাধারন সম্পাদক ক্যারিংটন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহনগর শাখার সভাপতি ছাত্রনেতা জেমশন আমলাই বম। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সুমন মারমা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুলভ চাকমা ঢেঙা, সাধারন ছাত্রদের পক্ষ থেকে রিবেং দেওয়ান, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভানেত্রী চঞ্চনা চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত বিকাশ ধামাই, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান তারেক এবং জনউদ্যোগ এর পক্ষ হতে তারেক হোসেন মিদুল প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ৭ জানুয়ারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে যে সকল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী, জুম্ম স্বার্থ বিরোধী, অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী।
বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অলিখিত সামরিক শাসন বিরাজমান তার বিরুদ্ধে প্রগতিশীল সকল ছাত্র সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান তারেক বলেন, বাংলাদেকে বর্ণবৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও লক্ষ্য ভুলুণ্ঠিত হবে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থায়ী সেনাক্যাম্প গুলোর প্রত্যাহার এবং পাহাড়ীদের মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
জনউদ্যোগ এর প্রতিনিধি তারেক হাসান মিদুল বলেন, জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন সে আন্দেলনে বাঙালীদের সাথে পাহাড়ের বন্ধুরা ও ছিলো।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলভ চাকমা ঢেঙা বলেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হলে যুদ্ধ অনিবার্য এবং এতে পার্বত্য বাসী পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
সমাবেশের সভাপতি জেমশন আমলাই বলেন, গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আমলাদের অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ড আসলেই হাস্যকর। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে আইন শৃঙ্খলার চোখে দেখা হচ্ছে। এক দেশে দুই নীতি চলতে পারেনা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য এলাকায় একটি মিশ্র পুলিশ বাহিনী গঠন করার কথা থাকার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাহাড়ের যে সকল পাহাড়ী পুলিশ রয়েছে তাদেরকে অন্যত্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত পার্বত্য চুক্তির স্পষ্ট লংঘন। তিনি সরকারের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে দ্রুত প্রত্যাহার এর দাবি জানান।
বিক্ষোভ মিছিলটি অপরাজেয় বাংলা পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে আবার অপরাজেয় বাংলায় এসে থামে এবং সেখানেই প্রতিবাদী সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নিম্নলিখিত দাবীনামা উত্থাপন করা হয়-
১. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তবলী অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সকল অস্থায়ী সেনাক্যাম্প ও অপারেশন উত্তরণ প্রত্যাহার করতে হবে।
৩. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।