হোসেন’র একের পর এক মিথ্যা মামলার হয়রানি ও মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে সংবাদ সন্মেলন

fec-image

মো. হোসেন’র একের পর এক মিথ্যা মামলার হয়রাণী ও মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী বেগম নুরজাহান নামে এক নারী।

রবিবার (৫ মে) সকালে রাঙামাটি পৌরসভা সংলগ্ন একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনে এ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বেগম নুরজাহান অভিযোগ করে বলেন, হোসেন এই পর্যন্ত যতগুলো মামলা করেছে সবগুলো মিথ্যা। চারফুট গলির যায়গাটি নিয়ে যে সমস্যা চলছে তা আমার নামে রেকর্ডভুক্ত। বর্তমানে বাজার ফান্ড ১৬২ এ এবং বি প্লটের নাম দিয়ে যে কথা বলছে, আগে এই শব্দ ছিলো না ।

মোহাম্মদ হোসেনের ১৬২ এ প্লট নামে যে জায়গাটি তার দাবি করছে সেই জায়গাটি আমার বেগম নূর জাহানের নামে বন্দোবস্ত ছিলো। জায়গাটি যখন বন্দোবস্ত হয় তখন জায়গার সালামী খাজনা আমি জমা দেই। মোহাম্মদ হোসেন আমার জয়গার নামে একটি বেনামী মামলা করে চট্টগ্রাম কোর্টে নিয়ে যায়। মামলার ফাইলটি গোপণ রেখে আমার জায়গাটি দখল করে নেয়। আমার ফাইলটি বাজার ফান্ড গোপণ রেখে জায়গাটি মোহাম্মাদ হোসেনকে দিয়ে দেয় এবং মিথ্যা প্রতিবেদন লিখে। প্রতিবেদনে লিখে পৌরসভা অফিসের জন্য মোহাম্মদ হোসেন থেকে ১৬০০ বর্গফুট জায়গা খাস দখল করা হয়েছিল। তার পরিবর্তে তাকে সেখানে ৪০০ বর্গফুট জায়গা দেওয়া হয়। মোহাম্মদ হোসেন ৪০০ বর্গফুট জায়গায় ১৮৮৭ বর্গফুট জায়গা দখল করে প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করে। এই কথাটি বাজার ফান্ডের প্রতিবেদনে প্রকাশ আছে। বাজার ফান্ড রাঙামাটিতে এভাবে ছলচাতুরী করে সাধারণ জনগণকে নাজেহাল করছে এর অনেক প্রমাণ আছে। বাজার ফান্ডের কর্মচারীদের যেখানে চাকরি হয় সেখানেই শেষ হয়। তাদের কোন পোস্টিং হয় না। সরকারি সম্পত্তিগুলো নিজেদের মন মতো করে যাকে ইচ্ছে তাকে দেয়। তাদের প্রতিবেদনের উপরই সব নির্ভর করে।

তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদ হোসেনের নামে পৌরসভার হলের স্থানে কোন জমি ছিলো না। এগুলো প্রমাণ করার জন্য আদালতের কাছে আমি বিনীত আবেদন করছি। তার জায়গা থাকলে সরকারের কাছে তার রেকর্ড থাকবে। বাজার ফান্ড অবৈধ জায়গাকে বৈধতা দেওয়ার জন্যই এই প্রতিবেদন তৈরি করে।

চট্টগ্রাম আদালত হতে আমার জায়গার নথিটি  খুঁজে পেতে সে সময় ৪ বছর অতিবাহিত হয়। পরে আমাকে রাস্তার সামনের যায়গা ১১২ ফুট ও পিছনে ৩০-৪০ ফুট গর্ত যায়গাটি দেখিয়ে দিয়ে বলে এটি আমার যায়গা। আমার জায়গার উত্তর পাশে দিয়ে ২-৩ ফুট গভীর খাদ সেটা পানি যাওয়ার নালা ছিলো। গলিটি মূলত রাস্তার উপরের পানি যাওয়ার একটি নালা ছিল। আমি একজন অসহায় মহিলা। আমার কিছু করার ছিলো না। পার্শ্বের ২-৩র্ফুট সেই গর্তটি ধীরে ধীরে ৩০-৪০ ট্রাক মাটি ঢেলে ভরাট করি। কিন্তু মোহাম্মদ হোসেনের ঘরের সমস্ত পানি আমার নালা দিয়ে যায় ,যার কারণে এখন আবার ১৫-১৬ ফুট গর্ত হয়ে যায়। পরে মোহাম্মদ হোসেন আমার জায়গার গলি নিয়ে দরখাস্ত করে এই জায়গাটি নাকি সে রেখেছে তার দোকানে আলো বাতাস প্রবেশের জন্য। কিন্তু তার আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছিলো সে সময়। এখনো যদি জায়গাটি মাপা হয় ৩৬ বর্গফুটের মধ্যেই ৪ ফুট গলিটি থাকবে আমার জায়গার ভিতরই।

৪ ফুট গলিটি সরেজমিনে দেখলে প্রমাণ পাওয়া যাবে গলিটি ভরাট মাটির এখনো গর্ত রয়েছে প্রায় ১ ফুটের মতো, কারণ মোহাম্মদ হোসেন উপর থেকে স্পালাই এবং টাংকির পানি ছেড়ে দেয় এমনভাবে যাতে আমার বিল্ডিংটি ধ্বসে যায়। বিগত সময়ে এই কারণেই তার দেওয়া পানিতে আমার বিল্ডিং এর একটি রুমে ধ্বসে যায়।

৩৬০ বর্গফুটের পরেও তার পিছনে ও আমার পিছনে বাজার ফান্ডের পরামর্শে পতিত খাস জায়গা ৬৬০ বর্গফুট বর্ধিত অংশ হিসেবে বন্দোবস্তী পাই। আমার মোট জায়গা হলো ১০২০ বর্গফুট।

আমি ২য় তলার ছাদ করার সময় এই ৪ ফুট জায়গা আমার ছাদের ভিতরেই ছিলো। ছাদ বাধাঁর পরের দিন ঢালাই হওয়ার কথা ছিলো সকালে যখন ঢালাই করার জন্য লোকজন আসে দেখা গেলো আমার ছাদের ৪ ফুট বড় অংশ রাত্রে কেটে নিয়ে যায় কে বা কাহারা। সে সময়ে আমি থানায় অভিযোগ জানালেও কোন প্রতিকার পাই নাই। কারণ কোন স্বাক্ষী ছিলো না।

মোহাম্মদ হোসেন গুলি যদি ৪ ফুট বলে বিল্ডিংয়ের জানালা যদি ৩ ফুট থাকে তাহলে গলি থাকে কয়ফুট?

পরবর্তীতে মোহাম্মদ হোসেন তার বিল্ডিংয়ের ২য় তলা করার সময় জানালা কাটে ও গলির উপর সানসেট করে যা সম্পূর্ণ আমার জায়গার উপরে।

১৬-১৭ বছর ধরে মোহাম্মদ হোসেন মামলা করে আমাকে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ কে ছে বলে জানান তিনি।

নুরজাহান আরও জানান, আমার বিল্ডিংয়ের ২য় তলায় অর্ধেক অংশ না থাকায় বর্ষার সময় পানি পড়ে আমার ২য় তলাটি পানিতে ডুবে থাকতো। যার কারণে আমি বাধ্য হই ২ ফুট সানসেটসহ ঢালাই করতে। কারণ তার সানসেটটি আমার জায়গার উপর।

আমি যখন গত বছর হজ্বে যাই তখন সে তার ৩য় তলার তার বিল্ডিংয়ের দরজা আমার ছাদের দিকে করে রাখে ও আমার ছাদের উপর রাখা মালামাল ইট, বালু, কংকর সব গায়েব করে ফেলেছে, এবং আমার পানির ফাইপ ফুটো করে দেয় যার কারণে পানি পড়ে বিল্ডিংয়ে ঢুকছে। এভাবে আমার ক্ষতিসাধন করে আমি বাংলাদেশে না থাকি। এই রকম অত্যাচার সে আরও নানাভাবে করে যাচ্ছে বছরকে বছর। আমি তার অত্যাচারের কথা লিখলে শেষ হবে না।

তার কারণে আমি বিল্ডিংয়ের কোন কাজ করতে পারি না। আমার বিল্ডিংটি এখন খোলা পড়ে আছে। আমার বিল্ডিংএ কোন শ্রমিক কাজ করতে গেলে তাদেরকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় ও আমাকে মারতে তেড়ে আসে এবং আমার বিল্ডিংয়ের রুম গুলোতে কোন ভাড়াটিয়া থাকতে পারে না। কারণ সে রাত্রে বালতি ভরে পানি ঢুকিয়ে দেয় রুমের ভিতর। আমি বাজার ফান্ড বরাবর আবেদন করি জায়গাটি মেপে দিতে। কিন্তু তারা মেপে না দিয়ে বারবার আমার বিরোধিতা করে। আমি উপায় না পেয়ে জেলা জজের মাধ্যমে ভূমি অফিসকে মেপে দেওয়ার জন্য আবেদন করি।

কিন্তু ভূমি অফিস থেকে রির্পোট আসছে আমার ৩৬০ বর্গফুট জায়গা আছে, এবং আমার বিল্ডিং এর পিছনের অংশ পিলারের উপর যে অংশটুকু আছে সেটা ভেঙ্গে ফেলতে বলে। সেটা কাপ্তাই লেকের জায়গা আমিও শিকার করি, রাঙ্গামাটিতে অধিকাংশ লোক ঘর বেধেঁছে কাপ্তাই লেকের উপরেই। তারপরেও সরকার চাইলে আমি ছেড়ে দিতে বাধ্য। কিন্তু সেখানে ভাল করে দেখলে বুঝতে পারবেন আমার জায়গাটিতে বর্তমানেও তেমন মাটি নেই। আগে থেকেই ১৩-১৪ ফুট মাটি ছিলো না। আমার বন্দোবস্ত ১০২০ বর্গফুট জায়গা আছে। যে জায়গাটুকু আমার নামে বন্দোবস্তী আছে সে জায়গাটুকু মোহাম্মদ হোসেন রাত্রের আধাঁরে টিনের ঘর বেঁধে ফেলে। আমি কোর্টে মামলা করি এবং নিষেধাজ্ঞা জারি করি। কিন্তু সে আইন অমান্য করে জোর পূর্বক ঘর বেঁধে রাখে।

ভূমি অফিসের আমিন কানুনগোর টাকা আমি জমা দিয়ে ছিলাম সরকারিভাবে আবার আবেদন করে উকিল কমিশন নেই এবং সরকারি আমিন কানুনগো দাবি করি। ডিসি অফিস থেকে কোর্টে নোটিশ মঞ্জুর হয়। সরকারি ফি এবং উকিলের টাকা আমি জমা দেই। কিন্তু কিসের ইশারায় উকিলরা এবং আমিন কানুনগো আমার জায়গা দেখতে আসে নাই। পরে আমি আমার টাকা গুলো ফেরত চাইলে সব টাকা পাইনি। আমি এভাবে হয়রানি হচ্ছি। প্রতিনিয়ত আমি আইনের কাছে বিচার পাচ্ছি না।

বাজার ফান্ড আমার যায়গার উপর গলি করতে চাচ্ছে । আমার যায়গার ২ প্লট পরে একটা ৮ ফুট গলি আছে বাজার ফান্ডের ম্যাপে। কিন্তু সে গলির কোন হদিস নেই। আমার বন্দোবস্তী জায়গার উপর বাজার ফান্ডের গলি করার মাথা ব্যাথা মোহাম্মদ হোসেনের টাকার জোরে আমার কাছ থেকে গলির জায়গা কেড়ে নিয়ে মোহাম্মদ হোসেনকে দেওয়ার জন্য।

এ যাবত মোহাম্মদ হোসেন আমার ৪ ফুট গলির যায়গাটি তার যায়গার ভিতর আছে বলে অনেকবার আমার বিরুদ্ধে মামলা করে হেরে গিয়েছে। এখনো আমার কাছে ২টি নকল কপি আছে বিগত মামলা গুলোর। বাকি গুলো আমার কাছে নেই। কিন্তু খোজ করলে কোর্টে পাওয়া জাবে।

আমি অসহায় আমার কেউ নাই। আমার ঘরটি খসে খসে পরে যাচ্ছে। আমি ঘরের কাজ করতে পারছিনা এবং ভোগ করতে পারছিনা বিবেক বানরা দেখলে বুঝতে পারবেন, এই রকম একটি বিল্ডিং থাকলে না খেয়ে থাকার কথা নয়।

আমি সামনের দোকানটা ছাড়া আর ভাড়া দিতে পারছি না। ঘরের ইট সিমেন্ট খসে খসে পড়ছে। ঘরটা উন্মুক্ত হয়ে আছে। ভাড়া দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। মোহাম্মদ হোসেন আমাকে দেখলে বলে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে দিবে।

মোহাম্মদ হোসেন আগে যেখানে ছিলো সেখানেও এভাবে পাশ্ববর্তীদের মামলা দিয়ে দিয়ে হয়রানি করতো। সে একজন মামলা বাজ লোক। আমার বর্তমানে যায়গা নিয়ে যে মামলা চলছে এ মামলা মোহাম্মদ হোসেন ২০১১ সালে করে। এর আগেও সে আমার নামে একাধিক মামলা করে। সে বলে আমাকে নাকি মামলা দিয়ে হয়রানি করতে করতে কবরে নিবে।

আমি এই মোহাম্মদ হোসেনের মামলার হয়রানি ও তার দেওয়া মানুষিক অত্যাচার থেকে বাঁচতে চাই।

আমার ছাদের দিকে দরজা করে রাখায় আমি ভয়ে ছাদে উঠতে পারি না। কারন ছাদে আমার নিরাপত্তা নেই। যে কোন সময় আমাকে ছাদে পেলে ক্ষতি করতে পারে। আমার জানের নিরাপত্তা নেই। ছাদে আমি উঠলে যে কোন সময় আমাকে হত্যা করতে পারে। মো. হোসেন ও তার ছেলে আতাউর সুমন সহ আমাকে প্রায় মেরে ফেলার এই ধরণের হুমকি দেয়। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার জানের নিরাপত্তা পাওয়ার জন্য আজকের এই সংবাদ সম্মেলন করলাম।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাঙ্গামাটি, সংবাদ সম্মেলন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন